নয়া দিল্লি : রাম সেতুকে জাতীয় ঐতিহ্যের স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। সেই আবেদনই আজ স্থগিত করল শীর্ষ আদালত। এই মামলার সূচনা বহু বছর আগে। ২০০৭ সালে রাম সেতুকে জাতীয় ঐতিহ্যের তকমা দেওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন স্বামী। রাম সেতুর সুরক্ষার কথা ভেবেই তিনি এই আবেদন করেছিলেন।
সেতুসমুদ্রম প্রকল্পের আওতায় জলের নীচে মান্নারের সঙ্গে পাল্ক প্রণালী সংযোগকারী ৮৩ কিলোমিটার লম্বা সেতু তৈরি করা হয়েছিল। এই সেতুকেই যাতে কেন্দ্র জাতীয় ঐতিহ্যের তকমা দেয় তাই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন বিজেপি সাংসদ। এই আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি হচ্ছিল বিচারপতি ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড় ও এ.এস. বোপান্না বেঞ্চে। এই বেঞ্চ জানিয়েছে জাতীয় ঐতিহ্যের মর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কার্যনির্বাহীর বিশেষ অধিকার। তবে স্বামী সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টির তদন্ত করছে বলে কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে নির্লিপ্ত রয়েছে। বেঞ্চের তরফে এদিন জানানো হয়েছে, কিছুদিন আগেই এই বেঞ্চের কাছে এই আবেদনের বিষয়টি হস্তান্তর করা হয়েছে। ফলে নথিপত্র খতিয়ে দেখতে সময় লাগবে বেঞ্চের। এর মধ্যে এই বিষয়ে নিজের অবস্থান জানিয়ে কেন্দ্রের তরফে যাতে হলফনামা জমা দেওয়া হয় তার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন কেন্দ্র যদি তাঁর আবেদনের বিরোধিতাও করে তা স্পষ্ট করে জানানোর আর্জি জানিয়েছেন স্বামী।
তিনি এদিন বলেছেন, ‘তাদের হলফনামা দাখিল করা উচিত এবং কখন তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন তা জানানো উচিত। এই মামলা চলেই যাচ্ছে। তারা যদি এই বিরোধিতা করে থাকেন তাদের তা জানিয়ে দেওয়া উচিত। অন্যথায়, তারা এটি সমর্থন করছে। এছাড়া অন্য কোনও পথ নেই।’ সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছেন তিনি নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানাবেন। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে স্বামী বিচারপতি ডি.ওয়াই. চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের কাছে এই মামলার জরুরি ভিত্তিতে গ্রহণের দাবি জানান। বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানিয়েছিলেন, বেঞ্চের বাকি সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করে জানাবেন যে পরবর্তী কবে এই বিষয়টি উত্থাপন করা যেতে পারে। তিনি তারপর সেদিনই প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণের কাছে এই মামলা নিয়ে যান। তিনি পুনরায় চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে বিষয়টি তোলার কথা জানান। প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুর দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে একটি সেতু রয়েছে যেটাকে রাম সেতু বলে দাবি করা হয়। দক্ষিণ ভারতের রামেশ্বরমের কাছে পামবান দ্বীপ থেকে শ্রীলঙ্কার উত্তরের উপকূল অবধি এই সেতু রয়েছে। রামায়ণে উল্লেখ রয়েছে, সীতাকে বাঁচাতে শ্রীলঙ্কা পৌঁছোনোর জন্য ভগবান রাম এই সেতু নির্মাণ করেছিলেন।