ভুবনেশ্বর: অতিরিক্ত মদ্যপান এবং বন্ধুদের রসিকতার জেরে প্রাণটাই যেতে বসেছিল ওড়িশার এক ব্যক্তির। মদ খেয়ে যখন তিনি বেহুঁশ হয়েছিলেন, সেই সময় তাঁর বন্ধুরা মজা করে একটি স্টিলের গ্লাস তাঁর পায়ুদ্বার দিয়ে ঢুকিয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ। আশ্চর্যের বিষয় হল, বিষয়টি সম্পর্কে ওই ব্যক্তি অবগতই ছিলেন না। ১০ দিন ওই অবস্থায় থাকার পর, রবিবার (২১ অগস্ট) ওড়িশার বেরহমপুরের এমকেসিজি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে ওই ব্যক্তির মলাশয় থেকে ওই স্টিলের গ্লাসটি বের করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটেছিল এর ১০ দিন আগে। ওড়িশার গঞ্জাম জেলায় তাঁর বাড়ি হলেও, কর্মসূত্রে গুজরাটের সুরাটে থাকেন কৃষ্ণ রাউত। ৪৫ বছরের ওই ব্যক্তি দিন ১০ আগে বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করতে গিয়েছিলেন। ওই দিন প্রচুর মদ্যপান করে বেহুঁশ হয়ে পড়েন কৃষ্ণ রাউত। সেই সময় তাঁর বন্ধুরা গোপনে তাঁর মলদ্বারে একটি স্টিলের গ্লাস ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। এই সম্পর্কে কৃষ্ণ রাউতকে তারা কিছু জানায়নি, কৃষ্ণ রাউতেরও এই সম্পর্কে কোনও ধারণা ছিল না। তবে, পরের দিন নিম্ন অন্ত্রে তিনি ব্যথা অনুভব করেছিলেন।
সেই অস্বস্তি অসহ্য হয়ে উঠলে তিনি সুরাট থেকে তিনি ওড়িশার গঞ্জাম জেলায় তাঁর গ্রামের বাড়িতে ফিরে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ফিরে আসার পর তাঁর অসুস্থতা আরও বেড়ে যায়। মলত্যাগ করতে না পারায়, ক্রমে তাঁর পেট ফুলতে শুরু করেছিল। পরিবার পরিজনের পরামর্শে তিনি শারীরিক পরীক্ষার জন্য এমকেসিজি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়েছিলেন। চিকিৎসকরা প্রথমে তাঁর সমস্যার কারণ বুঝতেই পারছিলেন না। এক্স-রে পরীক্ষার ফলাফল হাতে আসার পর চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন, তাঁর মলাশয়ে একটি গ্লাস আটকে আছে। প্রথমে ডাক্তাররা মলদ্বার দিয়েই গ্লাসটি বেৎ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায়, চিকিৎসকরা কৃষ্ণ রাউতকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন।
অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়ায় অংশ নেন সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জিত কুমার নায়েক, ডাক্তার সুব্রত বড়াল, সত্যস্বরূপ এবং প্রতিভা। দলটির, নেতৃত্ব দেন হাসপাতালের সার্জিক্যাল বিভাগের প্রধান অধ্যাপক চরণ পান্ডা। অন্ত্রকে টুকরো করে কেটে ওই স্টিলের গ্লাসটি বের করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্ত্রোপচারের পর তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন।