নয়া দিল্লি: গালওয়ান সংঘর্ষের চার বছর পর, অবশেষে ভারত-চিন সীমান্তের অচলাবস্থা কাটার ইঙ্গিত মিলল। সোমবার (২১ অক্টোবর), বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি জানালেন, ভারত ও চিনা সামরিক কর্তাদের বৈঠকে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলাকায় টহলদারির বিষয়ে দুই দেশ ঐক্যমতে পৌঁছেছে। বিক্রম মিসরি বলেন, “গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যে আলোচনা হয়েছে তার ফলস্বরূপ, ভারত-চিন সীমান্ত এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর টহলদারি ব্যবস্থার বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো গিয়েছে। এর ফলে দুই দেশের সেনা প্রত্যাহার করার দিকে এগোচ্ছে এবং শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালে এই অঞ্চলে যে সমস্যাগুলি দেখা দিয়েছিল তার অবসান ঘটতে চলেছে।”
প্রসঙ্গত, ওই এলাকায় কাদের বাহিনী টহল দেবে, তাই নিয়েই মতানৈক্যে জড়িয়েছিল দুই পক্ষ। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে চিন সেনা ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীন অংশে টহল দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। এরপর ২০২০ সালের ১৫ জুন রাতে, গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের টহলদার বাহিনীর সদস্যরা রক্তাক্ত সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। ভারতের ২০ জন জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন। চিনের পক্ষ থেকে হতাহতের সংখ্যা কখনই প্রকাশ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছিল, তাদের অন্তত ৪০-৪৫ জন সেনাকর্মীর মৃত্যু হয়েছিল।
আগামিকাল থেকেই রাশিয়ার কাজানে শুরু হচ্ছে ১৬তম ব্রিকস সম্মেলন। যোগ দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং – দুজনেরই। ঠিক তার আগে এই চুক্তিতে পৌঁছল দুই দেশ। বিক্রম মিসরি জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে আস্তানা এবং ভিয়েনতিয়েনে দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক হয়েছিল। এরপর, গত মাসে ডব্লিউএমসিসি বৈঠক হয়। এই সকল বৈঠকের উপর ভিত্তি করে, দুই পক্ষের মধ্যে একটি খোলামেলা, গঠনমূলক এবং দূরদর্শী আলোচনা হয়েছে। পার্থক্য কমিয়ে আনতে এবং জটিল বিষয়গুলির দ্রুত সমাধানের জন্য, কূটনৈতিক এবং সামরিক চ্যানেলে আরও কয়েক রাউন্ড আলোচনার পর এই ঐক্যমত এসেছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, দুই দেশের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কমান্ডারদের মধ্যে বৈঠকের মাধ্যমে, অতীতে সীমান্ত এলাকা বরাবর বিভিন্ন স্থানে অচলাবস্থা কেটেছিল। এখন টহলদারি বিষয়েও একটা ঐক্যমতে পৌঁছন গিয়েছে। তবে, এরপরও এমন কয়েকটি জায়গা রয়েছে, যেখানে অচলাবস্থা এখনও রয়েছে। সেই জায়গাগুলির সমস্যার সমাধান এখনও করা যায়নি।