নয়া দিল্লি: লাখপতি বা কোটিপতিদের বাড়িতে গিয়ে আচমকাই হাজির হতেন ‘অজয়’ আর ‘পিকে শর্মা’। তারপর আয়কর হানার নামে চলত লুঠপাট। ‘স্পেশাল ২৬’ ছবির সেই গল্প তৈরি হয়েছিল এক সত্যি ঘটনার ওপর ভিত্তি করে। আর এবার বাস্তবে তেমনভাবেই প্রতারণার ছক সাজানো হল দিল্লিতে। অভিযোগ পেয়ে হাতে নাতে ধরে ফেলল দিল্লি পুলিশ। এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে ব্যবসায়ীর সন্দেহ হওয়ায় পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা জেরায় জানিয়েছেন, স্পেশাল ২৬ ছবিকেই অনুকরণ করে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিলেন তাঁরা। ইডি অফিসার সেজে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা হাতাতে চেয়েছিলেন।
দিল্লির নিপ্পন ইন্ডিয়া পেন্টস লিমিটেডের কর্ণধার হরদেব সিং এই প্রতারণার শিকার হন। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল কমিশনার রবীন্দ্র সিং যাদব জানিয়েছেন, অভিযোগকারী ব্যবসায়ীকে একের পর নোটিস পাঠানো হয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের নামে। সেই নোটিসে বলা হয়েছে, ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার বেআইনি সম্পত্তির অভিযোগ রয়েছে। একথা বলেই চাপ দেওয়া হচ্ছিল তাঁকে। একবার নয়, স্পিড পোস্টের মাধ্যমে এরকম একাধিক নোটিস পাঠানো হয় হরদেবসিং-কে।
বেশ কয়েকটি নোটিস পাওয়ার পর ওই ব্যবসায়ী অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা ব্যবসায়ীকে জানান, ২-৩ কোটি টাকা দিলে সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারেন। টাকার অঙ্ক কিছুটা কমানোর জন্য জোরাজুরি করেন ব্যবসায়ী। এরপর তাঁকে দেখা করতে বলা হয়। সেইমতো দিন ঠিক করে মুম্বই এয়ারপোর্ট যান ব্যবসায়ী, সেখানেই আসেন দুই অভিযুক্ত। ব্যবসায়ীকে তাঁরা বোঝান, কয়েক হাজার কোটি টাকার মামলা মাত্র ২-৩ কোটিতেই মিটে যেতে পারেন। এরপর তাঁরা দাবি করেন, বিমানের টিকিট কেটে তাঁদের দিল্লি নিয়ে যেতে হবে। সেই মতো ব্যবসায়ী দুজনকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে একটি বিলাসবহুল হোটেলে থাকার বন্দোবস্ত করে দেন। এরপরই টাকার অঙ্ক বাড়িয়ে দেয় ওই দুজন। ২০ কোটি চাইতে থাকেন তাঁরা।
এরপর আর দেরি করেননি হরদেব সিং। তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। প্রথমে ওই দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে জেরার মুখে তাঁরা জানান, তাঁদের আরও সঙ্গী রয়েছেন দিল্লির ওই হোটেলেই। এখনও পর্যন্ত ওই চক্রের মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।