ভারতের G20, একুশ শতকের সবথেকে সফল আন্তর্জাতিক সম্মেলন: জি কিষাণ রেড্ডি
G Kishan Reddy on G20 Summit 2023: ভারতের জি২০ সভাপতিত্বে যে 'জি২০ নয়া দিল্লি নেতাদের ঘোষণাপত্র' প্রকাশ করা হয়েছে, এই গোষ্ঠীতে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী। জি কিষাণ রেড্ডি জানিয়েছেন, এই ঘোষণাপত্র পথ দেখাবে জি২০-র পরবর্তী দুই সভাপতি দেশ - ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।
নয়া দিল্লি: ভারতের সভাপতিত্বে সদ্য সমাপ্ত জি২০ শীর্ষ সম্মেলনকে একবিংশ শতাব্দীর সবথেকে সফল আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলন হিসেবে চিহ্নিত করলেন কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি। তাঁর মতে, গোটা জি২০ সভাপতিত্বের মেয়াদকালের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর বার্তাকে তুলে ধরেছে মোদী সরকার। জন ভাগীদারির চেতনা বিরাজ করেছে। ‘নয়াদিল্লি ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ এরই ফল বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। নয়া দিল্লির জি২০ শীর্ষ সম্মেলনকে একবিংশ শতাব্দীর সবথেকে সফল বলার পিছনে বেশ কিছু কারণও উল্লেখ করেছেন তিনি –
আফ্রিকান ইউনিয়নের স্থায়ী সদস্যপদ প্রাপ্তি
জি কিষাণ রেড্ডির মতে, আন্তর্জাতিক ফোরামগুলিতে ‘গ্লোবাল সাউথ’ অর্থাৎ, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির কন্ঠস্বরের প্রতিনিধিত্বের জন্য বারংবার দাবি জানিয়েছে ভারত। জি২০-এর নতুন স্থায়ী সদস্য হিসেবে আফ্রিকান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্তি সেই ধারাবাহিকতারই অংশ। আন্তকর্জাতিক ক্ষেত্রে ঐক্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধিতে নেতৃত্বদানের ক্ষমতার প্রমাণ ক্ষেত্রে দিয়েছে ভারত।
রেল ও জাহাজ সংযোগ নেটওয়ার্ক
জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে মধ্যপ্রাচ্যকে কেন্দ্র করে বিশাল রেল ও জাহাজ সংযোগের নেটওয়ার্ক স্থাপনের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, সৌদি আরব, উপসাগরীয় এবং আরব রাষ্ট্রগুলি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্পর্কের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। চিনকে কটাক্ষ করে জি কিষাণ রেড্ডি বলেছেন, এই উদ্যোগ সত্যিকারের ‘অংশিদারির প্রতীক’। চিনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ আসলে অংশিদারদের ঋণের জালে ফেলার ফাঁদ বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাশিয়া ও চিনের সম্মতিক্রমেই নয়া দিল্লি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্বনেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিশাল ভাবমূর্তির কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্যটন এবং সংস্কৃতিতে গুরুত্ব
নয়া দিল্লির জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্যটন এবং সংস্কৃতি মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে বলে জানানো হয়েছে জি২০ ঘোষণাপত্রে। এই ঘোষণা, জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী। গোয়ার জি২০ পর্যটনমন্ত্রীদের বৈঠকে যে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে যে ‘গোয়া রোডম্যাপ’ গ্রহণ করা হয়েছিল, তাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে নেতাদের ঘোষণাপত্রে। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে সংস্কৃতির উপরও সমান গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
সাংস্কৃতিক সম্পদ পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই
একইসঙ্গে, সাংস্কৃতির সম্পদ পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে সকল সদস্য-দেশ। এই ধরনের সম্পদ, তার প্রকৃত দেশ এবং সম্প্রদায়ের কাছে ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলি সুরক্ষা এবং সেগুলির প্রচারে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
ভারতের জি২০ সভাপতিত্বে যে ‘নয়াদিল্লি ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা হয়েছে, এই গোষ্ঠীতে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী। জি কিষাণ রেড্ডি জানিয়েছেন, এই ঘোষণাপত্র পথ দেখাবে জি২০-র পরবর্তী দুই সভাপতি দেশ – ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। অবশ্য, ভারতের সভাপতিত্বে এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী আর জি২০ নেই, আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রবেশে জি২১-এ পরিণত হয়েছে।