শ্রীনগর: ২০০৫ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন গুলাম নবি আজাদ। তারপর প্রায় দুই দশক কেটে গিয়েছে। এখন জম্মু ও কাশ্মীর আর রাজ্য , কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। এবার কি এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পরবর্তী উপরাজ্যপাল হবেন আজাদ? ২০২২-এর অগস্টে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন তিনি। তারপর ডেমোক্রেটিক প্রোগ্রেসিভ আজাদ পার্টি নামে নিজের নতুন দল খুলেছেন। এদিন তাঁর নতুন দলের বয়স এক বছর হল। তবে, কংগ্রেস ত্যাগের আগে থেকেই বিজেপির সঙ্গে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে বলে, গুজব ছিল। এখন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জুড়ে শোনা যাচ্ছে, পরবর্তী উপরাজ্যপাল হতে চলেছেন তিনি। তবে, রবিবার (১ অক্টোবর) কাশ্মীরের এই নেতা এই খবরকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিলেন।
এদিন দলের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শ্রীনগরে এক সবা করেন আজাদ। সেখানে প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা জানান, তিনি চাকরি খুঁজছেন না। তবে, যে কোনোভাবেই তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের সেবা করতে চান। আজাদ বলেন, “এখানে একটা নতুন গুজব ছড়িয়েছে যে, গুলাম নবি আজাদ পরবর্তী উপরাজ্যপাল হতে চলেছেন। আমি জনগণকে এই গুজবগুলি বিশ্বাস না করার জন্য অনুরোধ করছি। আমি জম্মু ও কাশ্মীরে কোনও চাকরি খুঁজতে আসিনি। আমি জনগণের সেবা করতে চাই।”
গুলাম নবি আজাদ আরও জানান, তিনি চাকরি খুঁজছেন বলে রটাতে চাইছে ‘কিছু লোক’। ‘কিছু মহল’ থেকে বলা হচ্ছে বিজেপির নির্দেশেই তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনীতিতে ফিরেছেন। তিনি বলেন, “আমি যখন ২০০৫ সালে এখানে (জম্মু ও কাশ্মীরে) মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এসেছিলাম, তখন আমি মানুষের সেবা করার জন্য আবাসন ও নগরোন্নয়ন এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রকের মতো দুটি সম্মানিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ছেড়ে দিয়েছিলাম। মনে হয় না তখন আমি কর্মহীন ছিলাম।”
তিনি আরও জানান, বেকারত্ব এবং মূল্যবৃদ্ধিই জম্মু ও কাশ্মীরের দুটি প্রধান সমস্যা। এই অঞ্চলের পর্যটনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এই দুই সমস্যার সমাধান করতে চান তিনি। ইউরোপেও মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে স্বীকার করেও তিনি জানান, তাদের হাতে সেই সমস্যার মোকাবিলার অন্য উপায় আছে। কিন্তু ভারত একটি দরিদ্র রাষ্ট্র। কাজেই এখানে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব অত্যন্ত মারাত্মক। তিনি আরও জানিয়েছেন, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেকারত্বও বাড়ছে। সরকার চাকরির বিজ্ঞাপন দিলেও, তার ইন্টারভিউ হয় না। শিক্ষিত যুবকরা কর্মহীন। তাদের লেখাপড়ার পিছনেই তাদের বাবা-মায়েদের সব সঞ্চয় শেষ হয়ে যাচ্ছে। কাশ্মীরে পর্যটনই সমাজের সমস্ত শ্রেণির জন্য জীবিকা তৈরি করতে পারে। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ১০ থেকে ১২টি পর্যটনস্থল গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছিলেন।
সংবিধানের ৩৭৯ এবং ৩৫ ক অনুচ্ছেদ বাতিলকে ‘বড় ভুল’ বলেছেন আজাদ। দলীয় নেতাদের সতর্ক করেছেন, যাতে প্রতিপক্ষের কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ না করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীরে ইদানিং মাদকের চোরাচালান অত্যন্ত বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।