গোয়া: ছোট ছোট রাজ্য দখল করেই জাতীয়স্তরের রাজনীতিতে পা রাখতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত সপ্তাহেই দলীয় সূত্রে জানা যায়, ত্রিপুরার পাশাপাশি গোয়াকেও নিশানা বানিয়েছে তৃণমূল। আগামী বছর গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনেও প্রচার করতে যেতে পারেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। এ বার শোনা গেল, গোয়াতেও দল ভাঙানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। সোমবারই তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের অন্য়তম শক্তি লুইজ়িনহো ফালেইরো। আজ বিকেলেই তাঁর সাংবাদিক বৈঠক করার কথা। সেখানেই দল বদলের ঘোষণা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
কংগ্রেস সূত্রে জানানো হয়েছে, লুইজ়িনহোর সাংবাদিক বৈঠকের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। এরপরই তাঁর তৃণমূলে যোগদান নিয়ে গুঞ্জন আরও জোরদার হয়। দলের সঙ্গে অনেকদিন ধরেই নাকি বনিবনা হচ্ছিল না প্রাক্তন মুখ্য়মন্ত্রীর। এ দিকে, গত সপ্তাহেই শুক্রবার গোয়ায় যান তৃণমূলের দুই সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং প্রসূন বন্দ্যোপধ্যায়। তারা লুইজ়িনহোকে তৃণমূলে যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছেন, এমনটাই দাবি সূত্রের।
তৃণমূল প্রতিনিধিদের গোয়া সফরে যাওয়ার তিনদিন পরই কংগ্রেস নেতার আকস্মিক সাংবাদিক বৈঠকের ডাকেই দলবদলের আশঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ১৭টি আসন জিতেছিল। বিজেপি পেয়েছিল ১৪টি আসন। বেশি আসনে জয়ী হয়েও ক্ষমতা পায়নি কংগ্রেস, কারণ সে সময় দল বদলে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক পড়েছিল। ফলে ক্ষমতার মসনদে বসেছিল গেরুয়া শিবিরই। এবার সেই গোয়াকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর প্রথম শিকারই হতে পারেন কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
রবিবার ভবানীপুরের প্রচারসভা থেকেও দাঁড়িয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে, এ বার গোয়াতেও ফুটবে ঘাসফুল। সূত্রের খবর, গত এক মাসের বেশি সময় ধরে আইপ্যাকের প্রায় ২০০ জন কর্মী সমীক্ষার কাজ চালিয়েছেন গোয়ায়। প্রাথমিক সমীক্ষার পর একটি রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়েছে বলেই সূত্রের দাবি।
সেই রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা ও অন্যান্য আরও বেশ কয়েকটি বিষয়ে আলোকপাত করতে শুক্রবার গোয়ায় পৌঁছেছেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আগামী সাত থেকে দশদিন গোয়াতেই থাকার কথা তাঁদের। এই সময়েই দলে গোয়ার একাধিক নেতৃত্বকে তৃণমূলে যোগদান করানোর লক্ষ্য রয়েছে বলে সূত্রের খবর।
সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, এরপর ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভা ভোটের আগে সে রাজ্যে যেতে পারেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেতে পারেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তারা ময়দানে নামবেন কিনা, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।