কাবুল: আরও এক-দু’দিন অপেক্ষা করতে হবে আফগানিস্তানে (Afghanistan) আটকে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের। সোমবার রাতেই কাবুল থেকে ভারতীয় বায়ুসেনার সি-১৭ গ্লোবমাস্টারে (C-17 Globemaster) করে উদ্ধার করে আনা হয় ৪৫ জন ভারতীয়কে। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী এক দুদিনের মধ্যেই ফের একবার বায়ুসেনার বিমান পাঠিয়ে প্রায় ১২০ জন ভারতীয়কে ফিরিয়ে আনা হবে।
তালিবান(Taliban)-র হাতে কাবুলের দখল চলে যাওয়ার পরই আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র। সোমবার অসমারিক বিমান চলাচল বাতিল হয়ে যাওয়ায় দুপুরেই বায়ুসেনার সি-১৭ গ্লোবমাস্টার বিমান পাঠানো হয়। প্রথমে ভাবা হয়েছিল, কমপক্ষে ৩০০ জন ভারতীয়কে ফিরিয়ে আনা হবে, যদিও পরে জানা যায় মাত্র ৪৫ জন ভারতীয়কেই ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও এয়ারলিফ্ট করেও আনা হতে পারে আটকে পড়া ভারতীয়দের।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্লোবমাস্টার বিমানটি সকালেই কাবুলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় কাবুল বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় বাধ্য হয়ে প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানে নামাতে হয় বিমানটিকে। মার্কিন সেনা বাহিনী বিমানবন্দরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পরই তা কাবুল বিমানবন্দরে পৌঁছয়। সূত্রের খবর, এখনও আফগানিস্তানে কমপক্ষে ৫০০ জন ভারতীয় আধিকারিক ও নিরাপত্তাকর্মী আটকে রয়েছেন।
গতকাল বিদেশমন্ত্রকের তরফেও একটি সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, আফগানিস্তানের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে ভারত। সবাইকে যাতে সুরক্ষিত অবস্থায় বের করে আনা সেই বিষয়টির উপরই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচীও জানান, বিগত কয়েকদিন ধরেই কাবুলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে।
রবিবারও কাবুলে গিয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমান। কিন্তু কাবুল বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে এক ঘণ্টা কাবুলের আকাশেই পাক খায় সেই বিমান। তালিবানদের নজর এড়াতে বিমানের ব়্যাডারও বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন পাইলট। অবশেষে কাবুল বিমানবন্দরে নামার অনুমতি পায় ওই বিমানটি। বিকালেই সুরক্ষিতভাবে ১২৯ জন ভারতীয়কে নিয়ে দিল্লিতে ফেরত আসে ওই বিমান।
এরপরই সোমবার ফের একটি এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান যাওয়ার কথা থাকলেও সকালেই জানানো হয়, কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ারস্পেস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আপাতত কোনও অসামরিক বিমান চলাচল করবে না। এরপরই এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি বাতিল করে দেওয়া হয়। সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই নোটাম (NOTAM) বা “নোটিস টু এয়ারমেন” জারি করা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, কাবুলের এয়ারস্পেস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তান অসামরিক উড়ান কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, সমস্ত দেশের উড়ানেরই যেন গতিপথ পরিবর্তন করে নেওয়া হয়। কাবুলের এয়ারস্পেসের নিয়ন্ত্রণ যেকোনও মুহূর্তে হাতছাড়া হতে পারে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে।