নয়া দিল্লি: সুপ্রিম কোর্টেও গ্রুপ ডি পদে চাকরি বাতিল আপাতত বহাল। ১৯১১ শূন্যপদে এখনই নিয়োগ নয়। নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। সব পক্ষকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ। ওএমআর শিট বিকৃত করে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে চাকরি যায় ১৯১১ জনের। সেই মামলায় আজ শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। পরবর্তী শুনানি দুই সপ্তাহ পর। কাউন্সেলিংয়ের ক্ষেত্রেও আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। অভিজ্ঞরা মনে করছেন, পরবর্তীকালে এই মামলায় সিবিআই একটা পার্টি হতে পারে। সিবিআই এই মামলায় তদন্ত করছে।
আইনজীবী পার্থসারথী দেববর্মন বলেন, “১৯১১ শূন্যপদ পূরণের আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত কোনও রকম কাউন্সেলিংয়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এটা একটা অন্তবর্তী আদেশ। ২০ মার্চ পরবর্তী শুনানি। আমরা আবার আবেদন জানাব। মূল বক্তব্য, OMR শিট নিয়ে সিবিআই-এর দেওয়ার তথ্যের ভিত্তিতে চাকরি আইনি কিংবা বেআইনি বলে গণ্য করা যাবে না।”
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে কিছুটা হলেও আশ্বস্ত হচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের এক জন বলেন, “বিচার ব্যবস্থার ওপর আমাদের সকলের আস্থা রয়েছে। কিন্তু অযোগ্যদের হয়ে যাঁরা আজ আওয়াজ তুলছেন, তাঁদের কাছে প্রশ্ন, শিক্ষিত সমাজ যখন অযোগ্যদের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়, তখন সমাজ বিকলঙ্গ হয়ে যায়। আমাদের একটা প্রার্থনা, টালবাহানা না করে অতি দ্রুত নিয়োগ করা হোক।”
মামলার প্রেক্ষাপট
হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে নবম-দশম শ্রেণির ১৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মীর। চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। ২০১৬ সালের গ্রুপ ডি নিয়োগ পরীক্ষায় যাঁরা বসেছিলেন তাঁদের মধ্যে ২৮২৩ জনের ওএমআর বিকৃত হয়েছে বলে স্বীকার করে কমিশন। এই ২৮২৩ জনের সুপারিশ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ১৯১১ জন চাকরি করছেন রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে। তারপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অবিলম্বে সেই ১৯১১ জনের ওএমআর শিট সাইটে আপলোড করার নির্দেশ দেন। এরপর তিনি তাঁদের চাকরি বাতিল করেন ও বেতন ফেরতের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে ও সুপ্রিম কোর্টে যান চাকরি হারানো কর্মীরা।
হাইকোর্টের সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেতন ফেরতের নির্দেশের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিলেও চাকরি বাতিল নিয়ে কোনও রায় দেননি। তারপরই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন ১৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মী। চাকরি প্রার্থী অচিন্ত কুমার মণ্ডল সুপ্রিম কোর্টে লিভ পিটিশন ফাইল করেন। কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন অচিন্ত্য কুমার মণ্ডল। সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলারই শুনানি ছিল।