গান্ধীনগর: বছরের শেষের দিকেই বিধানসভা নির্বাচন (Gujarat Election 2022) মোদী-শাহের রাজ্য। তার জন্য এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতি। রাজ্যে বিজেপি আরও একবার ক্ষমতা কায়েম করতে কোমর কষছে এখন থেকেই। পিছিয়ে নেই বিরোধীরাও। কংগ্রেসকে সরাসরি ময়দানে দেখা না গেলেও আপ নিজের উপস্থিতি খুব ভালভাবে টের পাওয়াচ্ছে গুজরাটবাসীকে। এই আবহে গুজরাটে নির্বাচনের আগেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (Uniform Civil Code) কার্যকর করার পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। শনিবার গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল (Bhupendra Patel) রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার জন্য একটি কমিটি গঠনের ঘোষণা করেছেন।
সংবাদ সংস্থা এএনআই অনুযায়ী, গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংগাভি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ এ বছর ডিসেম্বর মাসেই গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে বিভিন্ন রণনীতি খাড়া করছে শাসক ও বিরোধীরা। কেজরীবাল যেখানে বিনামূল্যে শিক্ষা সহ একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেখানে বিজেপি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর দিকে এক ধাপ এগোচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বিজেপির কাছে একটা বড় নির্বাচনী ইস্যু হল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়ই ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) নিজেদের নির্বাচনী ইস্তেহারে এই বিধি উল্লেখ করেছিল। দলের তরফে জানানো হয়েছিল, বিজেপি নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় এলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করা হবে। তবে বিরোধীরা বিজেপির এই এজেন্ডা নিয়ে সমালোচনা করতে ছাড়েনি। সমালোচকরা এই বিধিকে সংখ্যালঘুবিরোধী বলেও দেগে দিয়েছেন।
কী এই অভিন্ন দেওয়ানি আইন (Uniform Civil Code) ?
অভিন্ন দেওয়ানি আইন হল মূলত দেশের সকল নাগরিকের জন্য এক আইন। দেশের সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগত ক্ষেত্রেও একই আইন কার্যকর হবে। অর্থাৎ, উত্তরাধিকার, বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ এবং দত্তকের ক্ষেত্রে দেশের সকল নাগরিককে এক আইনই মেনে চলতে হবে। ভারতীয় সংবিধানের ৪৪ নং অনুচ্ছেদে এই সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ভারতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার জন্য রাষ্ট্রকে উদ্যোগ নিতে হবে।
গত ১৮ অক্টোবর কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে বলেছিল যে UCC কাম্য। তবে এর জন্য প্রয়োজন সংসদের জন্য একটি আইন প্রণয়ন করা। সরকার জানিয়েছে,ধর্মভিত্তিক ব্যক্তিগত আইনগুলি ‘জাতীয় ঐক্যের অবমাননা’। সরকারের তরফে আরও বলা হয়েছিল, অভিন্ন দেওয়ানি বিধিই বিভিন্ন সম্প্রদায়কে একটি প্ল্যাটফর্মে আনবে এবং ভারতের একীকরণ নিশ্চিত করবে। তবে দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হবে কি না তা কেবল নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং আইনসভাই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এক্ষেত্রে কোনও আদালত সংসদকে একটি সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করার জন্য নির্দেশ জারি করতে পারে না।