আহমেদাবাদ: বয়স যা-ই হোক না কেন, বাচ্চারা হাঁটতে, কথা বলতে শিখলেই পিঠে বই-ভর্তি ব্যাগ দিয়ে স্কুলে পাঠিয়ে দিতে হয়। তা না হলে নাকি বর্তমান যুগের সঙ্গে বাচ্চারা চলতে পারবে না। অনেক পিছিয়ে পড়বে। আজকালকার অভিভাবকদের অনেকের এমনই মত। কিন্তু, শৈশব বোঝার আগেই পিঠে ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যাওয়া যে বাচ্চাদের কাছে শাস্তিস্বরূপ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এই বিষয়ে এবার রায় দিল গুজরাট আদালত। ৩ বছর বয়সের নীচে বাচ্চাদের জোর করে স্কুলে পাঠানো বেআইনি কাজ বলে জানাল গুজরাট হাইকোর্ট (Gujarat High Court)। শুধু তাই নয়, ৬ বছর বয়সের নীচে বাচ্চাদের প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করা যাবে না বলেও জানিয়েছে আদালত। চলতি শিক্ষাবর্ষ ২০২৩-২৪ থেকেই এই নিয়ম চালু হবে বলেও আদালতের তরফে জানানো হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বাচ্চাদের স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির বয়সসীমা ধার্য করে একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল গুজরাট সরকার। রাজ্যের সেই নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গুজরাট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কয়েকজন অভিভাবক। তাঁদের দাবি ছিল, তাঁদের সন্তানের বয়স এখনও ৬ বছর হয়নি। কিন্তু আরটিই আইন অনুসারে তাঁদের সন্তানদেরও স্কুলে ভর্তির সুযোগ দেওয়া থেকে আটকানো যায় না। অভিভাবকদের সেই আবেদন সম্পূর্ণ খারিজ করে দেয় গুজরাট হাইকোর্ট। এপ্রসঙ্গে আদালতের প্রধান বিচারপতি সুনীতা আগরওয়াল এবং বিচারপতি এন.ভি আনজারিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ ‘প্রি-স্কুল’-এ ভর্তির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, ৩ বছর বয়স হওয়ার আগেই বাচ্চাদের প্রি-স্কুলে ভর্তি করানো হয়। যা অবৈধ। এই আবেদনকারীরাও শিক্ষার অধিকার আইন ভঙ্গ করতে চাইছেন। তাই তাঁদের আবেদন গ্রাহ্য হবে না বলে জানিয়ে দেয় দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
আদালতের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, ৩ বছরের নীচে কোনও বাচ্চাকে প্রি স্কুলে ভর্তি করা যাবে না। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই নিয়ম কার্যকরী হবে। অর্থাৎ ১ জুনের আগে শিশুর বয়স ৩ বছর না হলে প্রি-প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি করা যাবে না। একইভাবে ১ জুনের আগে বাচ্চার বয়স ৬ বছর না হলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করা যাবে না।
গুজরাট হাইকোর্টের তরফে দুই বিচারপতির বেঞ্চ আরও জানায়, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ অনুসারে, একটি শিশুর মস্তিষ্কের ৮৫ শতাংশের বেশি বিকাশ ৬ বছর বয়সের আগে ঘটে। তাই তার আগে শিশুদের সুস্থ মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটাতে প্রাথমিক বয়সগুলিতে মস্তিষ্কের যত্ন ও সহজাত উদ্দীপনার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।