বারাণসী: জ্ঞানব্যাপী মসজিদে সমীক্ষার সময় হিন্দু ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে দাবি করা যে ঐতিহাসিক বস্তুগুলি পাওয়া গিয়েছে, তা জেলাশাসককে হস্তান্তর করার জন্য আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে নির্দেশ দিল বারাণসী জেলা আদালত। জেলা আদালতের পক্ষ থেকে, জেলাশাসক বা তাঁর মনোনীত কোনও ব্যক্তিকে ওই বস্তুগুলি রক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলি আদালতের হাতে তুলে দিতে হবে জেলাশাসককে। বুধবার (১৪ অগস্ট), বারাণসী জেলা আদালত বলেছে, “সমীক্ষাস্থল থেকে, এই মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত বা হিন্দু ধর্ম ও উপাসনা পদ্ধতির সঙ্গে সম্পর্কিত বা ঐতিহাসিক বা প্রত্নতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই মামলার ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক যে বস্তু এবং উপকরণগুলি পাওয়া গিয়েছে, তা জেলাশাসকের কাছে হস্তান্তর করা হবে। জেলাশাসক বা তাঁর দ্বারা মনোনীত কোনও অফিসারকে ওই জিনিসগুলি সুরক্ষিত রাখতে হবে। আদালত যখনই চাইবে, তখনই সেগুলি আদালতে উপস্থাপন করতে হবে।”
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একাংশের দাবি, বারাণসীর জ্ঞানব্যাপি মসজিদটি কোনও প্রাচীন হিন্দু মন্দির প্রাঙ্গনে তৈরি করা হয়েছিল। বারাণসীর কয়েকজন হিন্দু মহিলা মসজিদ প্রাঙ্গনে পূজার দাবি করে মামলা করেছিলেন। এলাহাবাদ হাইকোর্টে সেই মামলার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। সেই মামলার শুনানির ঠিক আগে এই আদেশ দিল বারাণসী জেলা আদালত। মহিলা আবদনকারীদের আবেদনের ভিত্তিতে, ২০২১ সালে এক আইনজীবীর নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করে জ্ঞানভাপি মসজিদের সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল বারণসীর এক নিম্ন আদালত। সেই আদেশকেও এলাহাবাদ হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
সতেরোশ শতকে তৈরি করা হয়েছিল জ্ঞানব্যাপী মসজিদ। তার আগে ওই স্থানে কোনও মন্দির ছিল কিনা, তা যাচাই করার জন্য এএসআই-কে মসজিদ চত্বরের বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল বারাণসী জেলা আদালত। জেলা আদালতের সেই রায় বহাল রেখেছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। তবে কোনওরকম খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিল হাইকোর্ট। হাইকোর্ট আরও জানিয়েছিল, বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা হিন্দু ও মুসলিম – উভয় সম্প্রদায়েরই ন্যায়বিচার পেতে সুবিধা হবে। হাইকোর্টের এই রায়ের পরই জ্ঞানব্যাপী মসজিদ চত্বরে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা শুরু করেছে এএসআই। জ্ঞানব্যাপী মসজিদ চত্বরে এই বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা সম্পূর্ণ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য, ৮ সেপ্টেম্বর এএসআই-কে বারাণসী জেলা আদালত আরও চার সপ্তাহ সময় দিয়েছিল।