হরিদ্বার: ভারতে সন্তান-সন্ততিদের বিবাহের এক বছর পর থেকেই বাবা-মা থেকে শুরু করে সকল আত্মীয়-পরিজনের মনে একটাই প্রশ্ন থাকে, নবদম্পতির কোলে কবে আসছে নতুন অতিথি? তবে, এই প্রবণতাকে আরও এক ধাপ উপরে নিয়ে গেলেন উত্তরাখণ্ডের এক প্রৌঢ় দম্পতি। নাতি-নাতনির মুখ দেখতে চেয়ে ছেলে ও ছেলের বউয়ের নামে তাঁরা মামলা ঠুকে দিয়েছেন। প্রৌঢ় দম্পতির সাফ কথা, আগামী এক বছরের মধ্যে নাতি কিংবা নাতনি চাই, নাহলে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
উত্তরাখণ্ডের হরিয়ানার বাসিন্দা এস আর প্রসাদ। জীবনের সর্বস্ব দিয়ে তিনি ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন। গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে আমেরিকায় প্রশিক্ষণ নিতেও পাঠিয়েছিলেন। তারপর ২০১৬ সালে ছেলের বিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর থেকে এস আর প্রসাদ এবং তাঁর স্ত্রী নাতি-নাতনি মুখ দেখার প্রত্যাশায় বসে আছেন। কিন্তু, ছেলে-ছেলের বউয়ের এই বিষয়ে কোনও ভাবনাই নেই।
এই অবস্থায় তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। আদালতে পেশ করা আবেদনপত্রে তাঁরা জানিয়েছেন, সন্তানের পিছনেই তাঁরা তাঁদের জীবনের সব সঞ্চয় ব্যায় করেছেন। এখন তাঁরা আর্থিক দুরাবস্থার মুখোমুখি। তাঁদের দাবি, এক বছরের মধ্যে নাতি কিংবা নাতনিকে পৃথিবীতে আনতে হবে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে তাদের কোনও বাছবিচার নেই। আর তা না হলে, ছেলে এবং ছেলের বউ – দুজনকেই আড়াই আড়াই করে মোট পাঁচ কোটি টাকা দিতে হবে।
I gave my son all my money, got him trained in America. I don’t have any money now. We have taken a loan from bank to build home. We’re troubled financially& personally. We have demanded Rs 2.5 cr each from both my son & daughter-in-law in our petition: SR Prasad, Father pic.twitter.com/MeKMlBSFk1
— ANI UP/Uttarakhand (@ANINewsUP) May 11, 2022
এস আর প্রসাদ জানিয়েছেন, ছেলেকে পড়াশোনা এবং আমেরিকায় প্রশিক্ষণের ব্যয়ভার বহনের পর, তাঁদের জমা সব টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিতে হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, ব্যাক্তিগত জীবনে এবং অর্থনৈতিকভাবে এই মুহূর্তে তাঁরা বিধ্বস্ত। আর সেই কারণেই এই মামলা দায়ের করেছেন।
তাঁর আইনজীবী এ কে শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, এই মামলা আসলে ভারতীয় সমাজের বাস্তব চিত্রটা তুবে ধরেছে। বাবা-মা ছেলে-মেয়েদের পিছনে তাঁদের সমস্ত অর্থ বিনিয়োগ করেন, যাতে তাঁরা ভাল উপার্জন করতে সক্ষম হয়। কিন্তু, সন্তানরা পরে তাদের বাবা-মায়ের দেখভালের জন্য অর্থনৈতিক চাহিদাটুকুও মেটায় না।