রাহুলের 'দুই ভারত' মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক বেড়েই চলেছে।
নয়া দিল্লি: বিরোধীদের আক্রমণে উত্তপ্ত বাজেট অধিবেশনও। বুধবারই লোকসভায় (Lok Sabha) কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) ‘দুই ভারতে’র ব্যাখ্যা দেন, যা ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। গতকাল থেকেই একের পর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাহুলের আক্রমণের পাল্টা জবাব দিয়েছেন। এবার মুখ খুললেন হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ (Anil Vij)। এ দিন তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধীর চিন্তাভাবমায় সমস্যা রয়েছে। ওনার মা-বাবা দুই দেশের বাসিন্দা হওয়ায়, উনি ভারতকেও দুটি ভাগে দেখেন।”
বিতর্কের সূত্রপাত:
বুধবার লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের ধন্যবাদ প্রস্তাবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, “বর্তমানে দুটি স্বতন্ত্র ভারত রয়েছে, একটি ধনীদের এবং অপরটি গরিবদের জন্য। এই দুই ভারতের মধ্যে ব্যবধান ক্রমশ বাড়ছে।” রাষ্ট্রপতির ভাষণে সাধারণ মানুষের কথারই উল্লেখ নেই, এই দাবি করে রাহুল বলেন, “আমি মনে করি তিনটি মৌলিক বিষয় রয়েছে। প্রথমটি হল একটি ভারত নয়, দুটি ভারতের ধারণা। এই দুই ভারতের একটি হল অত্যন্ত ধনী ব্যক্তিদের জন্য, যাদের প্রচুর সম্পদ রয়েছে। যাঁদের চাকরির প্রয়োজন নেই, জলের সংযোগ বা বিদ্যুৎ সংযোগের প্রয়োজন নেই। অন্যটি গরিবদের জন্য, যাদের এই সমস্ত কিছুরই প্রয়োজন রয়েছে।”
তিনি আরও দাবি করেন যে, দেশের মোট সম্পত্তির ৪০ শতাংশই হাতে গোনা কয়েকজনের কাছে রয়েছে, যেখানে দেশের মোট জনসংখ্যার ৮৪ শতাংশই দারিদ্রতার সীমায় পৌঁছে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই নিশানা করে তিনি বলেন, “আপনাদের সরকারই এই দুই ভারতকে তৈরি করেছে। তাই প্রধানমন্ত্রীজীকে অনুরোধ করছি এই দুই ভারতকে একত্র করার কাজ শুরু করুন।”
অনিল ভিজের জবাব:
রাহুলের এই মন্তব্যের জবাবেই এদিন হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার মায়ের বিদেশী নাগরিকত্বের প্রসঙ্গ তুলে আনেন। তিনি রাহুলকে কটাক্ষ করে বলেন, “এক ভারতের মধ্যেই দুটি ভিন্ন ভিন্ন ভারত দেখার বিষয়টি রাহুল গান্ধীর কাছে খুবই স্বাভাবিক। কারণ উনি দুটি সংস্কৃতির মিশ্রণে বড় হয়েছেন। ওনার মা সনিয়া গান্ধী ইটালিয়ান এবং ওনার বাবা রাজীব গান্ধী ভারতীয় ছিলেন। সেই কারণেই উনি ইটালি ও ভারতের সংস্কৃতিতে বড় হয়েছেন। ওনার চিন্তাধারাতেও সবসময় বিরোধ রয়েছে সেই কারণেই।”
সমালোচনায় সরব কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও:
লোকসভায় রাহুলের মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধী নিজেই বিভ্রান্ত। উনি বলছেন ভারত একটা দেশ নয়। উনি হয়তো ভারতের ইতিহাস জানেন না। ওনার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।”
আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজুও প্রাক্তন কংগ্রেস প্রধানের কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “কেবলমাত্র দেশের আইনমন্ত্রী হিসাবেই নয়, একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবেও, রাহুল গান্ধী দেশের আইন ব্য়বস্থা ও নির্বাচন কমিশন নিয়ে যা বলেছেন, তার তীব্র প্রতিবাদ করি। আমাদের গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এগুলি। রাহুল গান্ধীর উচিৎ এখনি দেশের সাধারণ মানুষ, আইন ব্যবস্থার কাছে ক্ষমা চাওয়া।” বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও একাধিক টুইট করে রাহিল গান্ধীকে ইতিহাসের পাঠ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Nishith Pramanik In Rajya Sabha :‘কোনও নির্দিষ্ট বাজেট নেই’, দেশের ক্রীড়াবিদদের সাফল্যে মোদীর জয়জয়কার নিশীথের