নয়া দিল্লি: তিলোত্তমার ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার মামলা স্বতঃপ্রণোদিতভাবে গ্রহণ করার সময়, সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, এটা শুধুমাত্র একটি হত্যার ঘটনা নয়। এর সঙ্গে দেশব্যাপী কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে। হাসপাতাল এবং অন্যান্য চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের শারীরিক ও মানসিক সুরক্ষার জন্য কেন্দ্রকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন এক বেঞ্চ। কেন্দ্রকে এর জন্য দুই সপ্তাহ দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়সীমার মধ্য়েই, বুধবার (২৮ অগস্ট), চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা বাড়াতে এবং তাদের নিরাপদ কাজের পরিবেশ দিতে তাৎক্ষণিক করনীয় কিছু ব্যবস্থার একটি তালিকা দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মুখ্য সচিব এবং পুলিশ ডিজিদের এই বিষয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।
কী কী ব্যবস্থা নিতে বলল কেন্দ্র? সব মিলিয়ে ১০টি করনীয় বিষয়ের তালিকা দিয়েছে মন্ত্রক –
১. হাসপাতাল ভিতরে বিশিষ্ট জায়গায়, স্বাস্থ্য পরিষেবাদানকারীদের সুরক্ষা বিষয়ক আইন এবং শাস্তি বা দণ্ডের বিশদ বিবরণ, ইংরেজি এবং স্থানীয় ভাষায় লিখুন।
২. সিনিয়র ডাক্তার এবং প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে একটি ‘হাসপাতাল নিরাপত্তা’ এবং ‘হিংসা প্রতিরোধ’ কমিটি গঠন করুন। এই কমিটিদুটিই নিরাপত্তা ব্যবস্থার কৌশল তৈরি করবে এবং বাস্তবায়ন করবে।
৩. হাসপাতালের মূল এলাকাগুলিতে সাধারণ মানুষ এবং রোগীদের আত্মীয়দের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং রোগীর পরিচর্যাকারী এবং/অথবা আত্মীয়দের জন্য একটি কঠোর ‘ভিজিটর পাস’ নীতি প্রয়োগ করুন।
৪. রাতের ডিউটির সময় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবন, সেইসঙ্গে হোস্টেল এবং হাসপাতালের অন্যান্য এলাকায় আবাসিক ডাক্তার এবং নার্সদের নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা করুন।
৫. সমস্ত ভবনের ভিতরে এবং হাসপাতাল ক্যাম্পাস জুড়ে যথাযথ আলো দেওয়া নিশ্চিত করুন।
৬. রাতের বেলা হাসপাতাল ক্যাম্পাসে নিয়মিত টহল দেওয়া নিশ্চিত করুন।
৭. সাতদিন ২৪ ঘণ্টার জন্য একটি সিকিওরিটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করুন।
৮. স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করুন।
৯. যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন করুন
১০. ক্যাম্পাস জুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা কার্যকর করা নিশ্চিত করুন।
কেন্দ্রকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি, স্বাস্থ্য পরিষেবা দানকারীদের নিরাপত্তার জন্য একটি জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। গত সপ্তাহেই স্বাস্থ্য মন্ত্রক সেই নির্দেশ পালন করেছিল। মন্ত্রিপরিষদের সচিব পদমর্যাদার এক কর্তার নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে। নিরাপদ কর্মস্থল এবং চিকিৎসা পেশাদারদের কীভাবে সুরক্ষিত রাখা যায়, সেই বিষয়ে সুপারিশ দেবে এই কমিটি। প্রতিবাদী ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এই আশ্বাস দিয়ে তাদের কাজে ফিরতে বলেছিল আদালত। দিল্লি এইমস-সহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তাররা কাজে ফিরেছেন। তবে আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁরা ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)