নয়া দিল্লি: দেশে হঠাৎ করেই বেড়েছে করোনা সংক্রমণ(COVID-19)। নিত্যদিনই আক্রান্ত হচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ। এরফলে তাদের টিকাকরণের দিনও পিছিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। কারণ সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর দেহে আপনাআপনিই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। এবার সদ্য করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের টিকাকরণের ক্ষেত্রে নয়া নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক (Union Health Ministry)। জানানো হল, সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার তিন মাস পর করোনা টিকা বা প্রিকশন ডোজ় (Precaution Dose) নেওয়া যাবে।
শুক্রবার কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, পরীক্ষাগারে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের আগামী তিনমাস অতিরিক্ত কোনও সুরক্ষার প্রয়োজন নেই। সেই কারণেই প্রিকশন ডোজ় সহ করোনা টিকাকরণ সুস্থ হয়ে ওঠার তিন মাস পর দেওয়া হবে। সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচিব বিকাশ শীল জানান, যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের প্রিকশন ডোজ় দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সহায়তার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সেই মর্মেই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হচ্ছে যে যদি কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে সমস্ত করোনা টিকাকরণই তিন মাস পিছিয়ে যাবে। এরমধ্যে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী ও প্রাপ্তবয়স্কদের প্রিকশন টিকাকরণও অন্তর্ভুক্ত। সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে এই নয়া নির্দেশিকা অনুসরণ করে চলার অনুরোধও করা হয়।
অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচিব জানান, পরীক্ষাগারে গবেষণালব্ধ ফলাফল ও টিকাকরণ নিয়ে ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি গ্রুপের পরামর্শ মেনেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশে শুরু হয়েছিল করোনা টিকাকরণ। প্রথম ধাপে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের টিকা দেওয়া হয়। এরপর ২০২১ সালের ১ মার্চ থেকে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি ও ৪৫-৬০ বছরের মধ্যে ব্যক্তি, যাঁদের কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের জন্য়ও টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হয়।
২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয় ৪৫ বছরের বেশি বয়সী সকলের জন্য টিকাকরণ। ওই বছরই ১ মে থেকে শুরু হয় সমস্ত প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ ১৮ উর্ধ্বদের টিকাকরণ। নতুন বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে টিকাকরণের আরও এক ধাপ এগিয়ে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের করোনা টিকাকরণ শুরু হয়। ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা ও ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি, যাদের কোমর্ডিবিটি রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের প্রিকশন টিকাকরণ। প্রিকশন টিকার ক্ষেত্রে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ়ের ৩৯ সপ্তাহ অর্থাৎ ৯ মাস পর তৃতীয় ডোজ় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।