কর্নাটক : হিজাব পরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি কলেজ পড়ুয়াদের। একাধিক কলেজে ওঠে একই অভিযোগ। কর্নাটক আদালতে (Karnataka High Court) চলছে সেই সংক্রান্ত মামলা। হিজাব (Hijab) পরা ইসলামে কতটা জরুরি, উঠেছে সেই প্রশ্নও। বারবার এই ইস্যুতে সওয়াল জবাব হয়েছে আদালত কক্ষে। কর্নাটক সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে তাঁদের অবস্থান। তাঁদের দাবি, হিজাব পরা ইসলামের কোনও জরুরি রীতি নয়, হিজাব না পরলে সংবিধানও লঙ্ঘন করা হয় না। তবে এবার ফের এক আইনজীবী আদালতে কোরান উদ্ধৃত করে বোঝালেন হিজাব পরা কতটা জরুরি। বৃহস্পতিবার ছিল সেই মামলার শুনানির দশম দিন। ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা শুরু হয়। সাংবিধানিক প্রশ্ন থাকায় বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানো হয় সেই মামলা। কর্নাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতু রাজ অবস্তি, বিচারপতি কৃষ্ণা এস দীক্ষিত ও বিচারপতি জেএম গাজির বেঞ্চে চলছে সেই শুনানি।
শুনানি চলাকালীন কর্নাটকের নিউ হরাইজন কলেজের পড়ুয়ার পক্ষের আইনজীবী এএম দর উল্লেখ করেন হিজাব পরা ইসলামে বাধ্যতামূলক। আদালত কোরান সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত নয় বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, কোরান মতে, হিজাব পরা আল্লাহের শেষ আদেশ। কোরানের চতুর্থ হিজরিতে এর উল্লেখ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে জানিয়েছেন, আল্লাহের প্রথম নির্দেশ দিনে পাঁচবার প্রার্থনা করতে হবে। আর দ্বিতীয় আদেশ হল, জাকাত। ধনী মুসলিমদের জাকাত বা দান করার কথা বলা হয়েছে। উত্তরাধিকারের কথা রয়েছে তৃতীয় আদেশে, চতুর্থ আদেশ হল উপোস আর পঞ্চম আদেশ হল হজ। সবার শেষে হিজাবের কথা বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। তিনি আরও জানান, কোরানে হিজাব শব্দটির কোনও উল্লেখ নেই, তবে পর্দার কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুনানি চলাকালীন আদালত কক্ষেই কোরানের সুরা বা পংক্তি পড়ে শোনান আইনজীবী এএম দর। তিনি জানান, মহম্মদের স্ত্রীও হিজাব পরতেন।
এ দিনই আদালতে কর্নাটক সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া নামে সংগঠনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। উদুপির একটি কলেজে একজন লেকচারারকে হিজাব খুলতে বলার অভিযোগ উঠেছিল তাঁদের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, কোরানে হিজাবের কথা বলা আছে কি না, সেই বিষয়টাও আগেই শুনানিতে সামনে এসেছে। মামলার তৃতীয় দিনের শুনানিতে মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী হেগড়ে সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করেছিলেন, যেখানে প্রত্যেক ধর্ম পালনের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া আইনজীবী কামাথ ইসলাম ধর্মগ্রন্থ কোরানের উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘কোরান অনুসারে একজন মহিলার কর্তব্য হিজাব পরা।’