লখনউ: ‘সিরিয়াল কিলার’রা যেমন একের পর এক হত্যা করে থাকে, তেমনই এই মহিলা একের পর এক বিয়ে করতেন। তাই তাঁর নাম হয়েছে ‘সিরিয়াল ব্রাইড’ বা ‘ধারাবাহিক কনে’। তবে সে একা নয়, তার দলে ছিল আরও ৬ সদস্য। উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড জুড়ে ছড়িয়েছিল তাদের গ্যাং। নিশানা করত অসতর্ক অবিবাহিত পুরুষদের। বিয়ে করে তাদের তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালাত। গত ৬ মে বাকি গ্যাং সদস্যদের সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছিল এই ‘সিরিয়াল ব্রাইড’। তারপর জেলে পাঠানোর আগে, জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য। আর তাতেই চোখ কপালে উঠে গিয়েছে প্রশাসনের। পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, ওই মহিলা এইচআইভি পজিটিভ। অর্থাৎ, সে এইডস রোগে আক্রান্ত।
এই চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়ার পরই, এই মামলার অংশ হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরও। মঙ্গলবার (২৫ জুন) থেকে ওই মহিলার অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড দুই রাজ্যেরই স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা এই ধারাবাহিক কনের সঙ্গে বিয়ে করেছেন যে পুরুষরা, তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। এইচআইভি ছড়ায় প্রধানত যৌন সংসর্গের মাধ্যমে। কাজেই এই এইআইভি আক্রান্ত মহিলার সঙ্গে যে পুরুষরা বিয়ে করেছেন, তাঁদেরও এইডস সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরাখণ্ডের স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, তাদের রাজ্যে এই মহিলার বিয়ের শিকার হয়েছেন, এমন তিনজন পুরুষের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তিনজনকেই পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে তাঁরা এইচআইভি আক্রান্ত। এক এনজিও-র সহযোগিতায় উধম সিং নগরের স্বাস্থ্য বিভাগ এই তিনজনকে অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি দিচ্ছে।
গ্রেফতারির সময়, মহিলা জানিয়েছিলেন, উত্তরাখণ্ডের এই ৩ পুরুষ-সহ মোট পাঁচজনকে বিয়ে করেছে সে। বাকি গ্যাং সদস্যরা তার আত্মীয় হিসেবে পরিচয় দিত। গ্যাংয়ে তার নিজের মা-ও ছিল। সকলকেই গ্রেফতার করে মুজফ্ফরনগর জেলে রাখা হয়েছে। তবে, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের এখন প্রধান মাথাব্যথার কারণ ওই মহিলার এইচআইভি। তিনি আর যার যার মধ্যে এই দুরারোগ্য রোগ ছড়িয়েছেন, তাদের খুঁজে বের করাই এখন পুলিশের অগ্রাধিকার। মুজফ্ফরনগর জেলের জেলার, সীতারাম শর্মা বলেছেন, “জেলে আনার পর, জেলা হাসপাতালে ওই মহিলার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেখানে জানা যায়, তিনি এইচআইভি পজিটিভ। তারপর থেকে তাঁর অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি চলছে। গ্রেফতারির সময় তিনি বলেছিলেন, তিনি পাঁচজনকে বিয়ে করেছেন। তবে পুলিশের সন্দেহ, আরও অনেকেই তাঁর প্রতারণার শিকার হয়েছেন।” উত্তরাখণ্ডের পাশাপাশি, আক্রান্ত বরদের খুঁজছে উত্তর প্রদেশ স্বাস্থ্য দফতরও।
“