মুম্বই: বিয়ের মণ্ডপে বসে গিয়েছিলেন কনে। সেখান থেকে তাকে তুলে নিয়ে গেল তার বাবা ও কাকা। তারপর এক গাছের ডালে ফাঁসি দিয়ে তাঁকে হত্যা করে, দেহ পুড়িয়ে দিল। বাবা-কাকার হাতে কনের হত্যার এই নৃশংস ঘটনার পিছনে রয়েছে একটিই কারণ, পরিবারের সম্মান রক্ষা। ‘অনার কিলিং’ বা পারিবারিক সম্মান রক্ষার্থে হত্যার এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর), মহারাষ্ট্রে জালনা জেলায়।
জালনা জেলার পিরপিম্পলগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ১৭ বছরের সূর্যকলা সন্তোষ সরোদে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। প্রেমিক ছিল তাঁরই দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়। পরে, সূর্যকলা তাঁর বাবা, সন্তোষ সরোদেকে ফোন করেছিলেন। ফোনে বলেছিলেন তাঁরা দুজনে বিয়ে করতে চান। তখনকার মতো বিয়েতে সম্মতি দিয়ে মেয়েতে বাড়ি ফিরে আসতে বলেছিল সূর্যকলার বাবা।
তিন দিন পর, তিনি বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। ওই দিনই তাঁদের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। সমস্ত প্রস্তুতি সারা হয়ে গিয়েছিল। আশেপাশের গ্রাম থেকে সীমিত সংখ্যায় আত্মীয়-স্বজনরাও এসেছিলেন। কিন্তু, বিয়ের হওয়ার ঠিক আগেই, সূর্যকলার বাবা, সন্তোষ সরোদে এবং কাকা, নামদেব সরোদে, তাঁকে মন্ডপ থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর গলায় ফাঁস দিয়ে তাঁকে তাদের বাড়ির পাশের একটি গাছ থেকে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন বাবা-কাকা।
হত্যার প্রমাণ নষ্ট করতে তাঁর দেহ চিতায় তুলে পুড়িয়ে দিয়েছিল তারা। পরে সন্ধ্যায় তারা একটি ব্যাগে সূর্যকলার দেহ পোড়া ছাই ভরে ফেলে দিয়েছিল। পরিবারের একজনও এই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের বিরোধিতা করেনি। গ্রামের একজন ব্যক্তি এই ঘটনার বিষয়ে থানায় খবর দিয়েছিলেন। পুলিশ অবিলম্বে হানা দিয়েছিল গ্রামে। অভিযুক্ত বাবা ও কাকাকে আটক করেছে তারা।
পুলিশের দাবি সামাজিক অসম্মান এড়াতেই, সূর্যকলাকে হত্যা করেছে তার বাবা ও কাকা। নিজেদের অপরাধ গোপন রাখতে, মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে দেখাতে চেয়েছিল তারা। তার জন্যই তাকে গাছের সঙ্গে ফাঁসি দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আদালত, সন্তোষ সরোদে এবং নামদেব সরোদেকে তিন দিনের জন্য বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার আদেশ দিয়েছে। এই ঘটনার বিষয়ে আরও তদন্ত করা হচ্ছে।