নিতান্তই শহুরে মেয়ে শ্রেয়া। ‘জেন জি’-র প্রতিনিধি। কলকাতার এক নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। ডেটিং অ্যাপে সঙ্গী খুঁজতে বসেছিল। পেয়েওছিল একজনকে। সাম্য। মোটামুটি লম্বা। ধূমপান করে না। মাঝে মাঝে মদ্যপান করে। দেখতে-শুনতে ভালই। ভবিষ্যতে বাচ্চাও চায়। তার উপর ‘কে পপে’র ভক্ত। বিরিয়ানির ভক্ত। বিরাট কোহলির ভক্ত। সবেতেই টিক আর টিক। চোখ বুজে ডানদিকে সোয়াইপ (হ্যাঁ বলা) করেছিল শ্রেয়া। দুজনেই মনে করেছিল, তারা একে অপরের ‘পারফেক্ট ম্যাচ’। শুরু হয়েছিল দুজনের চ্যাটিং। রাতভর গল্পে গল্পে ‘কে পপ’ থেকে আলোচনা গড়িয়েছিল তাদের আরও অনেক পছন্দ-অপছন্দে। অনলাইন আড্ডাটা দুজনেই বেশ উপভোগ করছিল। দিন দুই সব ঠিকই চলছিল। নতুন প্রেমের উত্তেজনা ছিল।
তারপর সাম্যর প্রশ্ন, “তোমার রাজনৈতিক মতাদর্শ কী?” ছোট থেকে রাজনীতি নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামায়নি শ্রেয়া। জীবন জুড়ে ছিল ‘হ্যারি পটার’, ‘গেম অব থ্রোনস’, শপিং মল ইত্যাদি। তার বাড়িতেও রাজনীতি নিয়ে বিশেষ চর্চা নেই। রাজনৈতিক আলোচনা সে বরাবর এড়িয়েই এসেছে। কোনও বিশেষ দলের প্রতি তার কোনও ভাললাগাও নেই। তাই শ্রেয়া জবাব দিয়েছিল, “আমি মধ্যপন্থী। কোনও দলকেই খুব ভাল বা খারাপ লাগে না। আসলে আমি খুব একটা মাথা ঘামাই না রাজনীতি নিয়ে।” শ্রেয়া আন্দাজ করতে পারেনি, তার এই জবাবের কী পরিণতি হতে পারে। মুহূর্তে সুর পাল্টে গিয়েছিল সাম্যর। সে আবার কলেজ-বিশ্বদ্যালয়ে বাম রাজনীতি করা ছেলে। সাফ বলে দিয়েছিল, এই ধরনের ছেলে-মেয়েদের সে ঘৃণা করে। কারণ, সমাজের কোনও কিছু নিয়েই তাদের কোনও মাথা ব্যথা নেই। শ্রেয়াকে সে বলেছিল, “তোমার মতো মেয়েরাই সমস্যার কারণ। তোমাদের কোনও মাথা ব্যথা নেই বলেই এই সমাজের কোনও পরিবর্তন হয় না।”
শ্রেয়া ও সাম্যর আর কোনোদিন কথা হয়নি। তাদের রাজনৈতিক অবস্থান ভুলিয়ে দিয়েছিল কে পপ, বিরাট কোহলি, বিরিয়ানির প্রতি তাদের যৌথ ভালবাসা। ভুলিয়ে দিয়েছিল দুদিনের মনের ফুরফুরানি। শ্রেয়া ও সাম্যর ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। টিন্ডার, বাম্বল, হিঞ্জের মতো ডেটিং অ্যাপগুলিতে এখন লুকস, যৌন আবেদনের থেকেও অনেক বড় হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক মতাদর্শ, রাজনৈতিক পরিচয়। শুধু কে কোন দল বা মতাদর্শকে সমর্থন করছে, তা নয়। ভারতের কৃষক আন্দোলন থেকে শুরু করে আমেরিকার ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন, ইসরাইল-প্যালেস্টাইনের মতো বিভিন্ন ইস্যুতে অবস্থানও এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। একে অপরের সঙ্গে মিল না হলেই বাঁদিকে সোয়াইপ (প্রত্যাখ্যান)।
চুম্বকের মতো প্রেমেও একটি মেরু বিপরীত মেরুকে নাকি আকর্ষণ করে। রাজনৈতিক মতামতের ক্ষেত্রেও কি তা ঘটে? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী অস্মিতা। এখন কাজের সূত্রে থাকেন বেঙ্গালুরুতে। তিনি জানিয়েছেন, ভিন্ন মতাদর্শের পুরুষদের সঙ্গে ডেটিং করা ভয়াবহ অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। তাঁর মতে, কোনও ব্যক্তির রাজনৈতিক মতের উপর তার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর আচরণও নির্ভর করে। মার্কিন সোশ্যাল সাইকোলজিস্ট, জোনাথন হেড্টের গবেষণাতেও দেখা গিয়েছে বাম-মনস্করা অনেক বেশি উদ্ভাবনী প্রকৃতির হয়। আর, ডান-মনস্করা আনুগত্য এবং ঐতিহ্যের উপর জোর দেয় বেশি।
রাজনৈতিক মতাদর্শটা মেলাটা খুব প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন কলকাতার এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপিকা, সৃজনীও। তাঁর সঙ্গে তাঁর স্বামীর পরিচয় হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই সময় ডেটিং অ্যাপ ছিল না। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী প্রথমেই তাঁকে দুটি প্রশ্ন করেছিলেন, তিনি বাঙাল না ঘটি? এবং তিনি বামপন্থী তো? সঙ্গিনীর বাঙাল এবং বামপন্থী হওয়াটা আবশ্যক ছিল তাঁর স্বামীর জন্য। তিনি বলেছেন, “আমরা অগ্নিসাক্ষী করে বিয়ে করিনি, শুধু রেজিস্ট্রি। আমি শাঁখা-সিঁদুর পরি না। আমার স্বামীও চায় না। আমদের মত ভিন্ন হলে, সমস্যা হত না?”
দিল্লির বাসিন্দা সৌরভ, বাম্বলে খুবই সক্রিয়। ডেটিং অ্যাপে তিনি ডানপন্থীদের খোঁজেন। কারণ তিনি নিরামিষাশী। তিনি বলেছেন, “ডানপন্থীরা যেহেতু বেশি ধার্মিক, তাই তাদের নিরামিষাশী হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। তাই আমার পক্ষে তাদের সঙ্গে ডেট করাটা সহজ হয়। যদি দুজনের রাজনৈতিক মতাদর্শ এক হয়, তাহলে তারা একই ধরনের সিনেমা, টিভি শো, মিম পছন্দ করবে। আমাদের পছন্দ-অছন্দগুলো মিলবে। এক অর্থে, প্রথম থেকেই ধরনের বিষয়ে আগ্রহ থাকবে আমাদের। সম্পর্কটা লম্বা হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে।”
আবার ডান বা বাম কোনোটাই চাই না, এমন মানুষও আছেন। টিন্ডার ইউজার অর্ক শিলিগুড়ির ছেলে। তিনি এমন কাউকে খুঁজছেন, যে তাঁর উপর কোনও মত চাপানোর চেষ্টা করবে না। তাঁর মতে, বাম বা ডান দিকে একগুঁয়ে যারা, তারা তাদের মতামত অন্যদের উপর চাপিয়ে দেয়। তারা খোলা মনের হয় না। তিনি বলেছেন, “পার্টনার হিসেবেও এই ধরনের মানুষ তাদের মত চাপানোর চেষ্টা করে। তাতে সম্পর্কটাই বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে।”
অনলাইন ডেটিং-এর বিষয়ে একটি গবেষণা করেছেন ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেগরি এ. হুবার এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল মালহোত্রা। তাঁরা দেখেছেন, ডেটিং অ্যাপে সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে কিছু কিছু বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। বয়স, লিঙ্গ, জাতিগত পরিচয় এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার পাশাপাশি, বিপুল সংখ্যক সম্পর্ক তৈরি হয় একই রকম রাজনৈতিক মতের উপর ভিত্তি করে। তাঁদের গবেষণা বলছে, আমরা এমন মানুষদেরই পছন্দ করি, যাদের একই রকম রাজনৈতিক ঝোঁক বা মতামত রয়েছে। তাঁরা এর একটা গালভরা নামও দিয়েছেন, “হোমোফিলি”।
২০২২-এ ডেটিং অ্যাপ বাম্বল একটি সমীক্ষা করেছিল। ভারতের ১০টি শহরের ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী ২০০০ নাগরিক অংশ নিয়েছিলেন সেই সমীক্ষায়। ৬৯ শতাংশ জানিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে বর্তমান রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। মূল সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিষয়গুলিতে মতামত না মিললে সম্পর্কে যাবেন না বলে জানিয়েছিলেন ২০ শতাংশ। আর ১৫ শতাংশ জানিয়েছিলেন, ভিন্ন রাজনৈতিক মতের জন্য তাঁরা সম্পর্ক ভেঙেছেন। টিন্ডার ইন্ডিয়ার সমীক্ষাতেও, ৬০ শতাংশেরও বেশি তরুণ ভারতীয় জানিয়েছেন, সম্ভাব্য পার্টনারদের রাজনৈতিক বিশ্বাস এক হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
কখনও কখনও রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে ধর্মও জড়িয়ে থাকে। সেটাও অনেকের কাছে ডেটিং অ্যাপে রাজনৈতিক পরিচয় জেনে নেওয়ার কারণ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলি একটি নির্দিষ্ট ধর্মের পক্ষে কথা বলার দাবি করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হিঞ্জ ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, তিনি খুব একটা ধার্মিক নন। ধরা যাক, তিনি এমন কাউকে পছন্দ করলেন, যিনি কোনও বিশেষ দলের সমর্থক। সেই দল যদি কোনও একটি ধর্মের সঙ্গে বড় বেশি গা ঘেষাঘেষি করে, তাহলে তা তাঁর জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে। তিনি বলেছেন, “অনেক সময় রাজনৈতিক বিতর্ক ধর্মীয় বিতর্কে পরিণত হয়। আমি দেখেছি সেই সময় মানুষ রেগে যায়, আগ্রাসী হয়ে পড়ে।”
অথচ, এক পরিবারের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মতাদর্শের মানুষ দেখা যায়। কলকাতার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিল্ম স্টাডিজ পড়ান বল্লভ। তাঁর জেঠু ছিলেন বিজেপির সমর্থক। বাবা সিপিএম। কাকা নকশাল। ছোটবেলায় পল্লব দেখেছেন, পারিবারিক কোনও অনুষ্ঠানে এই তিন ভাই উত্তপ্ত তর্ক রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়ত। তবে, ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়েই তাঁরা একই পরিবারে থাকতেন। পল্লব বলেছেন, “আসলে অনেক সময়ই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে রাজনৈতিক তর্ক হলেও, ব্যক্তিগত সম্পর্কে তার প্রভাব যাতে না পড়ে, সেই বিষয়ে সকলেই সতর্ক থাকেন। তবে, তরুণরা যারা গোটা জীবন একসঙ্গে কাটানোর স্বপ্ন দেখছে, তাদের পক্ষে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে মোকাবিলা করার অস্বস্তি সামলানোটা কঠিন হয়ে পড়ে। এই কারণেই ডেটিং অ্যাপেও মানুষ আজকাল উল্টো দিকের মানুষটার রাজনৈতিক মত সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জানতে চাইছে।”
তরুণ প্রজন্মের এই “হোমোফিলিক” চাহিদাটা আঁচ করতে পেরেছে ডেটিং অ্যাপগুলিও। তারাও প্রতিনিয়ত তাদের ইন্টারফেস, অ্যালগরিদম বদলাচ্ছে। রাজনৈতিক মত প্রকাশের জায়গা করে দিচ্ছে। ২০১৮ সালেই, বাম্বল তাদের ব্যবহারকারীদের রাজনৈতিক অবস্থান জানানোর জন্য প্রোফাইলে ব্যাজ ব্যবহারের সুবিধা যোগ করেছে। ব্যাজটি ব্যবহার করা না করা অবশ্য ব্যবহারকারীদের উপর নির্ভর করছে। টিন্ডার অ্যাপেও লোকসভা ভোট জুড়ে নির্বাচনী তথ্য দেওয়া হয়েছে। “ট্রাম্প কোয়েশ্চন” বলে একটি ফিচার তৈরি করেছে মার্কিন ডেটিং অ্যাপ, ‘ওকেকিউপিড’। এই ফিচার ব্যবহার করে ট্রাম্প সমর্থকদের প্রোফাইল ‘ফিল্টার’ করা যায়।
আসলে আজকের দিনে সময় সবথেকে মূল্যবান। তাই, শ্রেয়া-সাম্যর মতো, ডেট করা শুরু করে দিন দুই পরে যাতে প্রশ্ন না করতে হয়, সেই লক্ষ্যেই ডেটিং অ্যাপে এই নয়া বৈশিষ্টগুলি যোগ করা হচ্ছে। এতে একটা বিষয় স্পষ্ট। যে প্ল্যাটফর্মগুলিতে এতদিন রোগা না মোটা, কালো না সাদা, লম্বা না বেঁটে, নাক বোঁচা না টিকোলো, এমনকি যৌনাঙ্গের গঠনের মতো শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলির উপর সবথেকে বেশি জোর দিত মানুষ, এখন সেখানে অনেক বেশি কদর পাচ্ছে রাজনৈতিক-সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গী।
সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, ইন্টারনেটের বিবর্তন তরুণ সমাজের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য প্রবাহের কারণে, শুধু আঞ্চলিক বা দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতিও তাদের চর্চার বিষয় হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আন্দোলন যেমন সোশ্যাল মিডিয়া মারফত, মুহূর্তে ছড়িয়ে গিয়েছে গোটা বিশ্বে। দৈনন্দিন জীবনে না হোক, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের রাজনৈতিক মত স্পষ্টভাবে রাখতে এখন আর তারা পিছপা হচ্ছে না।
সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক আয়ুষ্মান জানিয়েছেন, আপাত অস্বস্তিকর স্পর্শকাতর বিষয়গুলিতে মতামত প্রকাশে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী বোধ করছে। এই রূপান্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই সঙ্গী বা সঙ্গিনী বাছার ক্ষেত্রেও তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে রাজনৈতিক সচেতনতা। তাঁর এক দলিত ছাত্রর কথা বলেছেন আয়ুষ্মান। সেই ছাত্রও ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করে। আর সেখানে তিনি নিজের দলিত পরিচয় নিয়ে সোচ্চার। তাঁর মতে, তিনি সুবিধাপ্রাপ্ত এবং সুশিক্ষিত হলেও, তাঁর পূর্বপুরুষদের অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। জাতপাতের কারণে এখনও অনেককে অনেক কিছু সহ্য করতে হচ্ছে। তাঁর সম্ভাব্য সম্পর্কের কারণে, তাঁর পরিবারকে যেন কোনোভাবে আঘাত পেতে না হয়, সেই বিষয়ে সচেতন তিনি।
সারা বিশ্ব জুড়ে আনুমানিক ৩৩ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করে। তবে, অ্যাপের মাধ্যমে ডেটিং করা খুব সহজ বিষয় নয়। মন কঠিন রাখতে হয়। অনেক দুর্বল জায়গায় আঘাতের মধ্য দিয়ে আসতে পারে প্রত্যাখ্যান। আপনি দেখতে কেমন, আপনি কী করেন এই ধরনের ব্যক্তিগত বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গে এখন আপনি রাজনৈতিকভাবে কাকে সমর্থন করেন তা দিয়েও আপনাকে যাচাই করা হবে। ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমেই এক হয়েছিল শ্রেয়া আর সাম্য। কিন্তু, তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ তাদের আলাদা করে দিয়েছিল। এটাই ২০২৪ সালে ডেটিং অ্যাপের জগতের বাস্তবতা।
তবে, এই হয় বাম, নয় ডান, নয় মধ্যপন্থী – এই কোনও একটি ছাঁচে ফেলার প্রবণতার সমালোচনা করেছেন ব্রিটিশ লেখিকা তথা সাংস্কৃতিক ভাষ্যকার আয়েশাত আকানবি। সোশ্যাল মিডিয়া এবং রাজনীতি নিয়ে বিশ্লেষণে তিনি বলেছেন, “অনলাইনে, মনে হতেই পারে কারও ধারণা পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু মানুষ হিসাবে, আমদের মধ্যে তফাতের থেকে অনেক বেশি মিল রয়েছে। এই সমাজ ব্যবস্থা আমাদের জোর করে বিভিন্ন গোষ্ঠীতে ভাগ করার চেষ্টা করে। ডেটিং এক সংবেদনশীল বিষয়। আমাদের খোলা মনে সম্পর্কের দিকে এগোতে হবে।” তবে, মার্কিন নারীবাদী লেখিকা, ক্যারল হ্যানিশ তো কবেই লিখেছিলেন, ‘দ্য পারসোনাল ইজ পলিটিক্যাল’ (ব্যক্তিগত ব্যাপারটা আসলে রাজনৈতিক)। একেই মন্ত্র করেছেন ভারত ও বাকি বিশ্বের ডেটিং অ্যাপ ব্যবহারকারীরা।
*পরিচয় গোপনের স্বার্থে সব নামই বদলে দেওয়া হয়েছে