নয়া দিল্লি: সংসদের গ্যালারি থেকে স্লোগান দিতে দিতে ঝাঁপ দিলেন দুই যুবক। কয়েক মিনিটের মধ্যে তাঁদের আটক করা হলেও, প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে অনেকগুলো। সংসদ ভবনের নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে যে কেউ কি এভাবে ঢুকে পড়তে পারে? যদিও বা পারে সে ক্ষেত্রে হাতে স্মোক বম্বের ক্যান থাকা কি সম্ভব? এত স্পর্শকাতর একটা জায়গায় কতগুলো নিরাপত্তার স্তর ভাঙলে তবে এমন ঘটনা ঘটতে পারে? প্রাক্তন এনএসজি কমান্ডো দীপাঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘যেখানে মাল্টিলেয়ার নিরাপত্তা থাকে, আলাদা আলাদা ফোর্স থাকে, সেখানে এমন ঘটনা কীভাবে ঘটে?’
লোকসভার ভিউয়ার্স গ্যালারি বা দর্শকের আসনে কীভাবে পৌঁছনো সম্ভব? জেনে নিন…
1. কোনও সাংসদের চিঠি নিয়ে যেতে পারেন সাধারণ মানুষ।
2. সাংসদ চিঠি দিলে, সেটা নিয়ে যেতে হবে সংসদ ভবনের রিসেপশনে।
3. রিসেপশনে প্রবেশ করার আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেক করা হবে। গেট-এর পাশাপাশি পরীক্ষা করবেন নিরাপত্তারক্ষীরাও।
4. চিঠি দেখানোর পর আপনার নামে পাস ইস্যু হবে। সেখানে দেখাতে হবে আধার কার্ড বা অন্য কোনও পরিচয়পত্র। জানাতে হবে ঠিকানা। দিল্লিতে কোন ঠিকানায় থাকছেন, সেটাও জানাতে হবে। তোলা হবে ছবি। পাস-এর মধ্যেই থাকবে কিউআর কোড। রিসেপশনে জমা দিতে হবে মোবাইল।
5. ওই পাস নিয়ে লোকসভা চত্বরে প্রবেশ করতে হবে। চেক হবে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে। পাশাপাশি সেখানে থাকে একটি মনিটর। তাতে ফুটে উঠবে ছবি। দেশের যাঁরা মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধী, তাঁদের নাম ও ছবি রয়েছে সংসদ ভবনের সিস্টেমে। তার সঙ্গে আপনার ছবি মিলিয়ে দেখা হবে।
6. এরপর হেঁটে এগিয়ে যেতে পারবেন সংসদের মূল ভবনের দিকে। চাইলে এদিক-ওদিক যেতে পারবেন না। নিরাপত্তারক্ষীরা সেখানে কড়া নজর রাখেন।
7. কোন গেট দিয়ে ঢুকতে হবে, তা পাস-এ লেখা থাকে। সেই গেটে গিয়ে আরও একটা নিরাপত্তা বলয় পেরতে হবে। থাকবে মেটাল ডিটেক্টর। মেলানো হবে ছবি, দেখাতে হবে আই কার্ড। স্ক্যান করা হবে পাস, মিলিয়ে দেখা হবে তাতে থাকা কোড।
8. সঙ্গে কোনও ধাতব জিনিস থাকলে সে সব জমা নিয়ে নেওয়া হবে মূল ভবনের প্রবেশদ্বারে। পেন, কয়েন সহ কোনও ধাতব জিনিস রাখা যাবে না। কোনও ব্যাগও থাকবে না। শুধুমাত্র আই কার্ড আর পাস নিয়ে ঢুকতে হবে।
9. তারপর যে করিডর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সেখান দিয়ে যেতে হবে কক্ষের দিকে। দর্শকাসনে প্রবেশ করার আগে আবার হবে এক দফা চেকিং। আবার মেটাল ডিটেক্টরে পরীক্ষা হবে। তারপর
সিটে বসতে দেওয়া হবে। বসার সঙ্গে সঙ্গে আপনার প্রতিটি মুভমেন্ট থাকবে নিরাপত্তারক্ষীর নজরে। ওই গ্যালারিতে থাকে কমপক্ষে ৩০ জন নিরাপত্তারক্ষী।
এই সব ধাপ পেরনোর পর নিরাপত্তারক্ষীদের কড়া নজরদারিতে থেকেও ক্যান হাতে কীভাবে দুজন ওভাবে লাফিয়ে নামলেন ওয়েলে, তা বুঝে উঠতে পারছেন না সাংসদরাও।