টাটা গ্রুপ ভারতের বৃহত্তম বহুজাতিক সংস্থাগুলির মধ্যে একটি। বর্তমানে টাটার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩৩ লক্ষ কোটি টাকা। ১৮৬৮ সালে জামশেদজি টাটার হাতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই সংস্থা। আজ টাটার পরিষেবা এবং পণ্য ১৫০ টিরও বেশি দেশে বিস্তৃত। ১৮৩৯ সালের ৩ মার্চ গুজরাটের নভসারিতে জন্ম নেওয়া সেই টাটা যে একদিন দেশের ভবিষ্যৎ বদলে দেবে তা হয়তো ভাবতে পারেননি অনেকেই। আজ যাকে গোটা বিশ্ব জামশেদজি টাটা নামে চেনে তিনি চিরকাল টাটা ছিল না। বরং জন্মের সময় তাঁর পরিবারের পদবী ছিল অন্য কিছু। তাহলে টাটারা আসলে কে? কী ভাবেই বা তাঁরা টাটা হয়ে উঠলেন? জানেন এর নেপথ্য রহস্য?
টাটারা আসলে কে?
মানিকন্ট্রোলের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কেরসি কাইখুশরু দেবু থাকেন নওসারিতে। তিনিই একবার জানান পারস্য থেকে এসে ভারতে আস্তানা গেড়েছিল একদল উপজাতি। পরে তাঁরাই সময়ের সঙ্গে পরিচিত হন পার্সি সম্প্রদায় হিসাবে।
পার্সিদের যে দল প্রথম এসেছিল, তাঁরা গুজরাটের সঞ্জনে এসে বসবাস শুরু করেন। গড়ে তোলেন বসতি। ধীরে ধীরে সময়ের সঙ্গে পার্সি সম্প্রদায় বংশবিস্তার করতে শুরু করে। সঞ্জনের বাইরেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে তাঁদের পরিবার। এভাবেই ১১২২ খ্রিস্টাব্দে প্রথম নওসারিতে এসে পৌঁছোয় পার্সিরা।
ওই একই সময়ে পার্সি দলের সঙ্গে আসেন একদল পুরোহিতও নওসারিতে আসেন। তাঁরা সেখানে অগ্নি মন্দির (পার্সিদের উপাসনালয়) এবং টাওয়ার অফ সাইলেন্স (শ্মশান) নির্মাণ করেন। এই অগ্নি মন্দিরের পুরোহিতরাই পরিচিত ছিল দস্তুর নামে। আর জামশেদজি -রতন টাটার পূর্বপুরুষরা ছিলেন দস্তুর। পূর্বপুরুষদের ২৫ পুরুষ ধরে পৌরিহিত্য করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন।
কী ভাবে দস্তুর থেকে টাটা হলেন?
জামশেদজির স্বপ্ন ছিল একটা বড় কিছু করার। সেই উদ্দেশ্যেই বাবার ব্যবসাকে আরও বড় করবেন বলে ঠিক করেন জামশেদজি। ২১,০০০টাকা পকেটে নিয়ে পাড়ি দেন মুম্বইতে। ধীরে এক বিরাট সাম্রাজ্যের স্থাপন করেন জামশেদজি টাটা।
শোনা যায় জামশেদজি টাটার বাবা নাসারওয়ানজি টাটা ছিলেন ভারী মেজাজী মানুষ। অল্পেতেই খুব রেগে যেতেন। পার্সিতে এমন স্বভাবের কোনও ব্যক্তিকে ‘টাটা’ বলা হত। ধীরে ধীরে সেই টাটা নামেই লোক মুখে বেশি ঘুরতে শুরু করে। সময়ের সঙ্গে দস্তুর হারিয়ে গিয়ে পদবী হয়ে যায় টাটা। সেই থেকেই নাসারওয়ানজি পরিবারও টাটা নামে পরিচিত।