নয়া দিল্লি: সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে নয়া দল তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ। রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদের বিদায় সম্ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। এমনকী মোদীর চোখের কোণে জল চিকচিক করে উঠতে দেখা গিয়েছিল। দলত্যাগের পর এবার সেই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন দলত্যাগী কংগ্রেস নেতা। আজাদ বলেন, “রাজ্যসভা থেকে আমার অবসরে নয়, অন্য একটি ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলেন। ২০০৬ সালে কাশ্মীরে এক গ্রেনেড হামলায় কয়েকজন গুজরাটি নাগরিক মারা গিয়েছিলেন। তখন আমি কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম আর মোদী সাহেব গুজরাটের। তখন তিনি আমার দফতরে ফোন করেছিলেন। ঘটনার নৃশংসতায় আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। উনি আমাকে কাঁদতে শুনেছিলেন। আমি তখন ওনার সঙ্গে কথা বলতে পারিনি।”
দলত্যাগের সিদ্ধান্ত সামনে আসার পর থেকেই আজাদ-বিজেপি আঁতাতের অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। এমনকী অনেকেই মোদীর সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠতা’-র প্রসঙ্গ টেনেও খোঁচা দিতে ছাড়ছেন। দলত্যাগের পর মোদী প্রসঙ্গে মুখ খুলে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন গুলাম নবি আজাদ। তিনি বলেন, “আমি ভাবতাম মোদী সাহেব হয়ত অমানবিক। আমি ভাবতাম ওনার যেহেতু কোনও স্ত্রী বা সন্তান নেই, তাই হয়তো উনি কোনও কিছুর পরোয়া করেন না। কিন্তু উনি মানবিকতা দেখিয়ে ছিলেন।”
রাফাল যুদ্ধ বিমান ক্রয়ে দুর্নীতি নিয়ে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদীর বিরুদ্ধে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগান তুলেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এদিন এ নিয়েও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন গুলাম নবি। আজাদ জানিয়েছেন, তিনি ও অন্যান্য সিনিয়র কংগ্রেস নেতারা মোদীর বিরুদ্ধে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগানের বিরোধিতা করেছিলেন। প্রবীণ কংগ্রেস নেতারা জানিয়েছিলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘চোর’ শব্দ ব্যবহার করা অপসংস্কৃতি এবং সেটা কংগ্রেসের মানায়ও না।
প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকদিন কংগ্রেসে জি-২৩ নেতাদের একের পর এক পদক্ষেপে সমস্যায় পড়ছে শতাব্দী প্রাচীন দল। কয়েকদিন আগেই উত্তর প্রদেশে থেকে সমাজবাদী পার্টির সমর্থন নিয়ে নির্দল হিসেবে রাজ্যসভায় গিয়েছেন কপিল সিব্বল। আরেক প্রবীণ নেতা আনন্দ শর্মা হিমাচল প্রদেশের দলের স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। আগামী দিন প্রবীণ নেতাদের কংগ্রেস কীভাবে সামাল দেয়, এটাই এখন দেখার।