নয়া দিল্লি: আতসবাজি থেকে দূষণের মাত্রা বাড়ছে মানতেই চাইলেন না দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। তাঁর যুক্তি, যদি বাজিতেই দূষণ বাড়ত, তাহলে গাজা ভূখণ্ডই বিশ্বের সবথেকে দূষিত জায়গা হত। কারণ, গত একমাসের বেশি সময় ধরে গাজা ভূখণ্ডে লাগাতার বোমা বর্ষণ করে চলেছে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। দূষণের কারণে দীপাবলিতে দিল্লি এবং তার আশপাশের এলাকায় বাজি ফাটানো নিষিদ্ধ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, তারপরও দিল্লিতে চোরাগোপ্তা বাজি ফেটেছে। যার জেরে সোমবার (১৩ নভেম্বর) দিল্লি রাজধানী এলাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা বায়ুর গুণমান ‘অত্যন্ত খারাপ’ হয়ে গিয়েছে। এর জন্য বিজেপি নেতাদেরই দোষারোপ করেছেন দিল্লির পরিবেশ মন্ত্রী গোপাল রাই। এরপরই, গাজার নিদর্শন টেনেছেন কপিল মিশ্র।
দিল্লি রাজধানী এলাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ‘খুব খারাপ’ হওয়ার পর, দূষণ পর্যালোচনার জন্য সোমবার দিল্লি সচিবালয়ে পরিবেশ দফতরের আধিকারিকদের এক বৈঠক ডাকেন গোপাল রাই। রবিবার দীপাবলির দিন, সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেই দিল্লিবাসী দেদার পটকা ফাটিয়েছে। এরপরই এই পদক্ষেপ করে দিল্লি সরকার। দিনের পরবর্তী সময়ে দিল্লির গড় বায়ু গুণমান সূচক ‘গুরুতর’ বিভাগে নেমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গোপাল রাই জানিয়েছেন, এদিনের পর্যালোচনা সভায় দিল্লি রাজধানী এলাকার সামগ্রিক বায়ু মানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দূষণ মোকাবিলায় যে যে রদক্ষেপ করা হয়েছে, সেগুলির প্রয়োগ কী অবস্থায় আছে, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন তাঁরা।
#WATCH | People burst firecrackers in Delhi on the occasion of #Diwali
Visuals from Punjabi Bagh. pic.twitter.com/h6oM71vR1t
— ANI (@ANI) November 12, 2023
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে গোপাল রাই বলেন, “আতসবাজি ফাটানোর ফলে দিল্লির দূষণের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। খুব বেশি মানুষ আতশবাজি ফাটাননি। তবে কিছু কিছু নির্দিষ্ট জায়গায় বাজি ফেটেছে। বিজেপি নেতারা যেভাবে মানুষকে উসকানি দিয়েছেন, তার ফল আজ দেখা যাচ্ছে। আজ দূষণের মাত্রা বাড়ার একমাত্র কারণ আতসবাজি পোড়ানো। এমনকি, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পরও, বিজেপি দায়িত্বশীল ভূমিকা নেয় না। এটা দুর্ভাগ্যজনক। বিজেপি চেয়েছিল আতসবাজি পোড়ানো হোক। দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ – তিন রাজ্যেই পুলিশ বিজেপির হাতে আছে। তারা চাইলেই এটা আটকাতে পারত।”
#WATCH | On bursting for firecrackers in Delhi on Diwali, Environment Minister Gopal Rai says, “There is a ban on production, storage and sale of firecrackers in Delhi. The firecrackers were brought to Delhi from UP and Haryana. The police of Delhi, Haryana and UP are under the… pic.twitter.com/yjbtl0yapD
— ANI (@ANI) November 13, 2023
দূষণের বিষয়ে গোপাল রাইয়ের এই বক্তব্য ‘লজ্জাজনক’ বলেছেন দিল্লি বিজেপির সহ-সভাপতি কপিল মিশ্র। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ এক ভিডিয়ো পোস্ট করে তিনি বলেছেন, “দূষণের জন্য বাজি ফাটানোকে দায়ী করা বোকামি। এক সপ্তাহ আগে, দিল্লির একিউআই ছিল ৫০০। আজ সকালে, একিউআই ২৯৬। কীভাবে দূষণের মাত্রা কমল? যদি আতসবাজি থেকেই দূষণ হতো, তাহলে গাজায় বিশ্বের সর্বোচ্চ দূষণ হতো। দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করুন, শিশুদের আতসবাজি ফাটানোর বিরুদ্ধে লড়াই করবেন না।”
#WATCH | People burst firecrackers in Delhi on the occasion of #Diwali
(Drone visuals, shot at 12:00 am) pic.twitter.com/rXE8NP80em
— ANI (@ANI) November 12, 2023
সোমবার দিল্লির বায়ুর গুণমান ‘খুব খারাপ’ বিভাগে ছিল। বাতাসে পিএম ২.৫, অর্থাৎ, অতি সূক্ষ্ম দূষিত কণার পরিমাণ অনুমোদিত মানদণ্ডের প্রায় ৩০ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে। মধ্যরাত থেকে ভোর ২টোর মধ্যে এর ঘনত্ব ক্রমে বেড়েছে। দিল্লির বিভিন্ন এলাকার যে ছবি এবং ভিডিয়ো সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে রাস্তাগুলি ঘন ধোঁয়াশার চাদরে ঢএকে গিয়েছে। কয়েকশ মিটারের বাইরে দেখাই যাচ্ছে না কিছু। আপ সরকার আতসবাজির উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ‘দিয়া জ্বালাও, পটাকে নেহি’ (প্রদীপ জ্বালাও, পটকা নয়) প্রচারও করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও, রবিবার রাতে লোধি রোড, আরকে পুরম, করোল বাগ এবং পঞ্জাবি বাগ-সহ দিল্লির বিস্তীর্ণ অংশের রাতের আকাশ আতসবাজিতে আলোকিত হতে দেখা গিয়েছে।