নয়া দিল্লি: আজ ভারতকে যে সমস্ত সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হলে, তা হত না। সোমবার, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ১৪৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নয়া দিল্লির সর্দার প্যাটেল বিদ্যালয়ের ছাত্রদের সামনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এমনই দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শাহ আরও বলেন, মোদী সরকার সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে আরও গভীর করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ করে চলেছে এবং দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করেছে। পাশাপাশি মাতৃভাষায় শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সর্দার প্যাটেল বিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সামনে, ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার প্যাটেল সম্পর্কে অমিত শাহ বলেন, “মৃত্যুর অনেক পরেও যে ব্যক্তিকে স্মরণ করা হয় শুধু তাঁকেই মহান বলা যেতে পারে। এরকমই এক ব্যক্তি ছিলেন সর্দার প্যাটেল। আমাদের দেশে একটি প্রচলিত মত রয়েছে যে, যদি সর্দার প্যাটেলকে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী করা হত, তাহলে ভারতকে আজ যে সব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, তার মুখোমুখি হতে হত না।” স্বাধীনতার পর ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৫০০ টিরও বেশি স্বাধীন রাজ্যকে জোড়ার ক্ষেত্রে প্যাটেলের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন অমিত শাহ। তিনি আরও জানান, অখণ্ড ভারতের বিষয়ে প্যাটেলের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে জানতে শিক্ষার্থীদের এই সম্পর্ক পড়াশোনা করা উচিত।
অমিত শাহ বলেন, “সর্দার প্যাটেল শুধুমাত্র দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষই ছিলেন না, তিনি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রমও করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন কর্মযোগী। সর্দার প্যাটেল না থাকলে, ভারতের মানচিত্র আজকের মতো হত না। তিনি লাক্ষাদ্বীপ, যোধপুর, জুনাগড়, হায়দরাবাদ এবং কাশ্মীরকে ভারতের সঙ্গে একত্রিত করেছিলেন।” এছাড়া, সমবায় আন্দোলন থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পরিষেবা, কেন্দ্রীয় পুলিশ, গোয়েন্দা ব্যুরো এবং আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি স্থাপনে সর্দার প্যাটেলের ভূমিকাও তুলে ধরেন অমিত শাহ।
তাঁর ভাষণে, অমিত শাহ ভারতীয় ভাষার প্রসারের উপরও জোর দেন। অভিভাবকদের বাড়িতে তাদের সন্তানদের সঙ্গে শুধুমাত্র মাতৃভাষায় কথা বলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “মাতৃভাষা কখনই ত্যাগ করবেন না। বিশ্বের অন্য সব ভাষা শিখুন, কিন্তু মাতৃভাষা ত্যাগ করবেন না। ভাষা আপনার বুদ্ধিমত্তার নয়, ভাব প্রকাশের একটি মাধ্যম মাত্র। ইংরেজি না জানার জন্য কারোর হীনমন্যতা থাকা উচিত নয়। মাতৃভাষাকে বাঁচিয়ে রাখুন।”
তিনি আরও দাবি করেন, মোদী সরকার দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে। যে কারণে, এখন কেউ ভারতের সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের কথা ভাবতেও পারে না। পাশাপাশি মোদী সরকারও সর্বজনীন উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। তার কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে ভারত ইংল্যান্ডকে পিছনে ফেলে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপনের সময়, গবেষণা, উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো, নিরাপত্তা ইত্যাদির ক্ষেত্রে দেশ কোথায় থাকবে সেই বিষয়ে দেশবাসীকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।