নয়া দিল্লি: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯ বা সিএএ ২০১৯, অসম এবং উত্তর-পূর্বের অন্যান্য রাজ্যের স্থানীয় বাসিন্দাদের সাংস্কৃতিক অধিকার লঙ্ঘন করে না। সোমবার, সুপ্রিম কোর্টকে জানালো কেন্দ্রীয় সরকার। তবে, সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা, অসম এবং ত্রিপুরা রাজ্যের পক্ষে উত্তর দাখিলের জন্য এদিন আদালতে সময় চেয়ে নেন। আদালত উত্তর দাখিল করার জন্য এই রাজ্যগুলিকে তিন সপ্তাহ সময় দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত, বিচারপতি রবীন্দ্র ভাট এবং বিচারপতি বেলা ত্রিবেদীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ জানিয়েছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯-এর সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে করা আবেদনের শুনানি ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত রাখা হল।
তার আগে আদালতে এই বিষয়ে একটি পৃথক হলফনামা দাখিল করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মন্ত্রক জানিয়েছে, সিএএ-তে এমন কোনও বিধান নেই যা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৯-এর আওতায় অসম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলির নাগরিকদের স্বতন্ত্র ভাষা, লিপি বা সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে। মন্ত্রকের মতে, এই আইন শুধুমাত্র ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ বা পাকিস্তান থেকে ভারতে পাড়ি দেওয়া হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি বা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের রক্ষা করার জন্যই প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইন কোনওভাবেই উদ্বাস্তুদের আগমনকে উৎসাহিত করে না।
কেন্দ্রের জমা দেওয়া হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, অসম এবং ত্রিপুরার উপজাতীয় অঞ্চলগুলিতে জনসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ আদিবাসী জনগোষ্ঠী বাস করে। এই এলাকাগুলিকে সিএএ-র আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এবং অসমের আরও কয়েকজন ব্যক্তি দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে অবৈধ উদ্বাস্তুদের অসমে অনুপ্রবেশ আটকাতে যে ১৯৮৫ সালের অসম চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল, সিএএ সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অবশ্য এই দাবি অস্বীকার করে জানিয়েছে, ১৯৫০ সালেক উদ্বাস্তু আইন (অসম থেকে বহিষ্কার)-এর দ্বিতীয় ধারার বিধানেও পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কাজেই, অসম চুক্তি এবং সিএএ-র মধ্যে কোনও বিরোধ নেই।
কেন্দ্রের এই জবাব পাওয়ার পর, সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানায়, যদি এই বিতর্কের দুই-তৃতীয়াংশ বিষয়কে প্রধান বিষয় হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং সমস্ত মতামতের সংকলন আগে থেকেই তৈরি করা হয়, সেই ক্ষেত্রে এই বিতর্কের সমাধান কার্যকরভাবে এবং সহজে অর্জন করা যেতে পারে। এর জন্য আবেদনকারী এবং উত্তরদাতাদের পক্ষে দুজন নোডাল কাউন্সেল নিযুক্ত করেছে আদালত।