জেনেভা: রাশিয়া-ইউক্রেনের টানাপোড়েন (Russia-Ukraine Conflict) পরিস্থিতি নিয়ে অতি সাবধানী ভারত (India)। রবিবারই ফের একবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের (United Nation’s Security Council) বৈঠক বসে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য। ওই বৈঠকেই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া যে আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে, তা নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্তের জন্য রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনের জরুরি সভার আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাবেও ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকল ভারত। তবে মস্কো ও কিয়েভ যে বেলারুশের সীমান্তে মুখোমুখি আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে, সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে নয়া দিল্লির তরফে।
রবিবারই রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল বৈঠকে বসে রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তাবনা আনা হয়। ১১টি দেশ রাষ্ট্রসংঘের জরুরি অধিবেশনের সপক্ষে ভোট দিলেও, ভারত কোনও পক্ষের হয়েই ভোট দিতে অস্বীকার করে। ভারত ছাড়াও চিন ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহিও মতদান থেকে বিরত থাকে। রাশিয়া এই অধিবেশনের বিপক্ষে ভোট দিলেও, রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদস্যদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠই অধিবেশনের সপক্ষে ভোট দেওয়ায় জরুরি অধিবেশনের আয়োজন করা হবে। সূত্রের খবর, সোমবার থেকেই এই জরুরি অধিবেশন শুরু হতে পারে।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালে রাষ্ট্রসঙ্ঘের গঠনের পর এই নিয়ে ১১বার জরুরি অধিবেশনের আয়োজন করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রসংঘের যে ১৯৩ টি সদস্য দেশকে নিয়ে সাধারণ অধিবেশন বসে, তার দাবিতেই গতকাল নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ভোটাভুটি হয়। এর আগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি আগ্রাসন প্রদর্শনের প্রস্তাবনা আনা হলেও, সেটিতে রাশিয়া ভেটো প্রয়োগ করায় ওই প্রস্তাবনা খারিজ হয়ে যায়। তবে এবারের প্রস্তাবনা রাষ্ট্রসঙ্ঘের অধিবেশনের দাবি নিয়ে হওয়ায়, এতে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের পাঁচ স্থায়ী সদস্য- চিন, রাশিয়া, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড ও আমেরিকার ভেটো প্রয়োগের অধিকার থাকে না।
রবিবার রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদের শেষ বৈঠকের পর ইউক্রেনের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কূটনৈতিক আলোচনা ছাড়া আর কোনও পথ নেই। আজ রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই দেশই যে বেলারুশ সীমান্তে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।”
টিএস তিরুমূর্তি জানান, ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়, বিশেষত পড়ুয়াদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে ভারত অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। সীমান্তগুলিতে অস্থির পরিস্থিতি ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টির কারণে উদ্ধারকার্য আরও কঠিন হয়ে পড়ছে বলেও তিনি জানান। এই সমস্যার যাতে দ্রুত সমাধান হয়, সেই প্রস্তাবও দেন তিনি।