নয়া দিল্লি: বছরের শুরুর দিকে পরিস্থিতি যা ছিল, তাতে অনেকে কূটনীতিবিদই মনে করেছিলেন ভারত চিন সীমান্ত পরিস্থিতি এবার স্বাভাবিক হতে পারে। শান্তি ফিরতে পারে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর। কিন্তু তারপর যত সময় এগিয়েছে তত বেজিং বুঝিয়ে দিয়েছে তাঁরা যেমন একগুঁয়ে ছিল, তেমনই রয়েছে। সীমান্ত থেকে সেনা সরানো নিয়ে এতদিন ধরে কম জলঘোলা হয়নি। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে একাধিক আলোচনা হয়েছে। বার বার কর্পস কমান্ডার স্তরে বৈঠক হয়েছে দুই দেশের। কিন্তু তাও কোনও রফাসূত্র বেরিয়ে আসেনি। আর এই সবের জন্য চিনের একরোখা মনোভাবকেই দায়ী করছেন কূটনীতিবিদদের একটি বড় অংশ। আর এইসবের মধ্যেই আজ আরও একবার মলডোয় দুই দেশের সেনার মধ্যে আবারও বৈঠক হয়। এই নিয়ে ১৩ বার।
সেনা সূত্রে খবর, আজ প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয় দুই দেশের সামরিক স্তরে। ভারত আজ আবারও সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা থেকে সেনা সরানোর জন্য চিনের উপর চাপ তৈরি করে। মূলত পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৫ থেকে চিনা সেনাকে সম্পূর্ণ সরিয়ে নেওয়ার উপর জোর দেয় ভারত।
তবে চিনা সেনার তরফে বৈঠকে কী বলা হয়েছে তা নিয়ে ওই সূত্র মারফত এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। এদিকে পূর্ব লাদাখের চূশূল – মলডো সীমান্ত চেকপোস্টের ওপারের বৈঠক প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত আধিকারিক স্তরে কোনও ঘোষণা করা হয়নি। আজ সকাল সাড়ে দশটা মলডোয় বৈঠকে বসেন দুই দেশের কর্পস কমান্ডার স্তরের সেনা কর্তারা। সন্ধে ৭ টা পর্যন্ত চলে বৈঠক।
এর আগের বৈঠক হয়েছিল প্রায় দুই মাস আগে। সেই সময়ের বৈঠকের পর গোগরা এলাকা থেকে লাল ফৌজ সরিয়ে নিয়েছিল চিন। এখন বাকি এলাকাগুলি থেকেও যাতে চিনা সেনাকে সরিয়ে নেওয়া হয়, তার উপর জোর দিয়েছে ভারতীয় সেনা।
এর আগে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের বিশ্ব সম্মেলনেও চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা ও সীমান্ত সমস্যা নিয়ে কথা বলেছিলেন।
গত বছর মে মাসে পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দখল নেওয়া ঘিরে সংঘর্ষ বাধে। জুন মাসে গালওয়ান উপত্য়কায় তা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আকার নেয়। ভারতের ২০ জন সেনা জওয়ান শহিদ হন। চিনের তরফে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে জানানো হয় যে, গালওয়ানের সংঘর্ষে তাদের পক্ষেরও বেশ কিছু জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। এরপরে এক বছর কেটে গেলেও সীমান্ত সমস্যা এখনও মেটেনি।
দুই পক্ষের তরফেই সেনা প্রত্যাহারের জন্য উদ্য়োগ নেওয়া হয় এবং ১২ দফায় সেনা ও কূটনৈতিক স্তরের বৈঠক করা হয়। এখনও অবধি লাদাখের প্যাংগং হ্রদ সহ কয়েকটি জায়গা থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হলেও গোগরা, হট স্প্রিং, দেপস্যাংয়ের মতো বেশ কয়েকটি সংঘর্ষস্থলে এখনও সেনা মোতায়েন রয়েছে।
আরও পড়ুন : Sputnik Light: এবার ভারত থেকে বিদেশে রফতানির অনুমোদন পেল স্পুটনিক লাইট