নয়া দিল্লি: চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকেই বিরাট হাইজাম্প দিল ভারতের অর্থনীতি। করোনার করাল থাবা কাটিয়ে ২০২১-২২ সালের অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিক; অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে জিডিপি-র হার বেড়েছে ২০.১ শতাংশ! যা একাধারে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে, পাশাপাশি অনেক আশা এবং সম্ভাবনারও জন্ম দিয়েছে। একে এক কথায় ঐতিহাসিকও বলা চলে। কারণ গত বছরই করোনার কোপে প্রথম অর্থবর্ষের জিডিপির হার মাইনাস ২৪.৪ শতাংশ ছুঁয়েছিল। সেই জায়গা থেকে এক বছরের মধ্যে তার বৃদ্ধি পৌঁছে গিয়েছে ২০.১ শতাংশে।
তবে চমকে দেওয়ার বিষয় হল- যে সময়ের মধ্যে এই বিপুল হারের আর্থিক বৃদ্ধি গোটা দেশে পরিলক্ষিত হয়েছে, সেই সময়ের করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সাক্ষী থেকেছে ভারত। যা ছিল প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় অনেক গুণে বেশি ভয়াবহ। যদিও এই পরিস্থিতির মধ্যেও অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে আর্থিক কর্মকাণ্ড কিছু পরিমাণে সচল রাখা হয়েছিল। বস্তুত তারই সুফল পাচ্ছে ভারত। একই সঙ্গে অগ্রগতির এই হার দেখে অর্থনীতিবিদরাও মনে করছেন, আগের জায়গা থেকে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ভারতীয় অর্থনীতি।
এই নিয়ে টানা তিনটি ত্রৈমাসিকেই ভারতীয় অর্থনীতির ইতিবাচক বৃদ্ধি অব্যাহত রইল। ২০২০-২১ সালের অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ০.৫ শতাংশ, ও চতুর্থ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ১.৬ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছিল। সেই জায়গা থেকে চলতি অর্থবর্ষের বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে সেই অনুমান আগেই করা গিয়েছিল। কিন্তু সেই বৃদ্ধি যে আশাতীত হবে, তা কোনও বিশেষজ্ঞই আশা করেননি।
তবে বৃদ্ধির হার যে দুই সংখ্যাতে থাকবে, সেই পূর্বাভাস আগে থেকেই দিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের এক সমীক্ষাতেও দাবি করা হয়েছিল, প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধির হার ১৮.৫ শতাংশ হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যদি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা ভারতের উপর না নেমে আসত, তবে এই আর্থিক বৃদ্ধির হারই থাকত ২৬.২ শতাংশের আশেপাশে। প্রত্যাশানুযায়ী বৃদ্ধি না হলে অর্থবর্ষের শেষে জিডিপি-র সর্বমোট হারে তা প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২০২০-২১ সালের অর্থবর্ষের প্রথম দুই ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল মাইনাস ২৪.৪ ও মাইনাস ৭.৪ শতাংশ। দেশজুড়ে টোটাল লকডাউনের জেরেই এই আর্থিক বিপর্যয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়। যে কারণে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় রাজ্যভিত্তিক নিয়ম নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখে আংশিক লকডাউনের উপর জোর দেওয়া হয়। আর্থিক লেনদেন যাতে সচল থাকে সেই বিষয়টির উপরও বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছিল। ঠিক সেই কারণেই চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতীয় জিডিপি সংকোচনের নাগপাশ কাটিয়ে ক্রমশই মাথা তুলে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। আরও পড়ুন: করদাতাদের জন্য বিরাট খুশির খবর, ফের পিছিয়ে গেল আয়কর জমা দেওয়ার সময়সীমা