নয়া দিল্লি: সারা বিশ্বের দেশগুলির ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর নজর রাখে মার্কিন সংস্থা ইউএসসিআইআরএফ (USCIRF)। সম্প্রতি, তাদের ২০২৩ সালের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা রিপোর্টে, তারা ভারতকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে। এই রিপোর্টে ভারত সম্পর্কে আরও বেশ কিছু উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে, বৃহস্পতিবার ভারত সম্পর্কে ইউএসসিআইআরএফ-এর এই রিপোর্টের তীব্র নিন্দা করল ভারতীয় সংখ্যালঘু ফাউন্ডেশন বা আইএমএফ। এক খোলা চিঠিতে তারা বলেছে, আফগানিস্তান, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া এবং চিনের মতো ‘স্বৈরাচারী শাসনের’ সঙ্গে তুলনা করে, ভারতের ভাবমূর্তি বিকৃত করার চেষ্টা করছে মার্কিন সংস্থাটি। ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো, প্রাণবন্ত নাগরিক সমাজ এবং বহুত্ববাদকে উপেক্ষা করা হয়েছে। আইএমএফ প্রশ্ন করেছে, ইউএসসিআইআরএফ কি ‘সংঘাতের দালাল’ না ‘সম্প্রীতির হাতিয়ার’?
আইএমএফ বলেছে, “আফগানিস্তান, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া এবং চিনের মতো স্বৈরাচারী শাসনের পাশে ভারতকে বসিয়ে, ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো, প্রাণবন্ত নাগরিক সমাজ এবং বহুত্ববাদী ইতিহাসকে উপেক্ষা করেছে ইউএসসিআইআরএফ। ভারতের ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কে এই বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন, ইউএসসিআইআরএফ-এর বিশ্বাসযোগ্যতা এবং বোঝাপড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়।” তারা আরও বলেছে, ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে ইউএসসিআইআরএফ-এর প্রতিবেদনে ভারতের একতা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করা হয়নি। ২০২০ সাল থেকেই ধারাবাহিকভাবে তারা ভারতকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ বলে চলেছে।
IMF strongly condemns the USCIRF’S International Religious freedom report. USCIRF’s efforts to label India alongside authoritarian regimes like Afghanistan, Cuba, North Korea, Russia, and China overlook India’s democratic framework, vibrant civil society, and pluralistic history.… pic.twitter.com/jHYGY6lPqp
— Indian Minorities Foundation (@Minoritiesfdn) June 27, 2024
অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের প্রেক্ষিতে, কাশ্মীর নিয়েও কড়া মন্তব্য রয়েছে এই প্রতিবেদনে। তা উল্লেখ করে আইএমএফ বলেছে, “ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট এই পদক্ষেপ বহাল রেখেছে। এটি সংবিধান সম্মত। ভারতীয় নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই সেখানে ভোটের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। এটা এই অঞ্চলের রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাওয়ার দিকে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।” আইএমএফ-এর আরও অভিযোগ, খালিস্তানি সমস্যাকেও মিথ্যাভাবে ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা’র বিষয় হিসেবে তুলে ধরেছে মার্কিন সংস্থাটি। তারা জানিয়েছে, মার্কিন সংস্থাটির এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে না মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। ভারতীয় সংখ্যালঘু ফাউন্ডেশন আরও বলেছে, ইউএসসিআইআরএফ-এর দাবিগুলির সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। তাদেরা মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রথম দিকে যেমন মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলি শত্রুপক্ষের বিমান আর মিত্রপক্ষের বিমান চিনতে পারেনি, ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে ইউএসসিআইআরএফ এই ভুল প্রতিবেদনও সেই ধরনের একটি ঘটনা।