ভারতের এমন এক রেলস্টেশন, যেখানে যেতে লাগে পাকিস্তানের ভিসা!
এই স্টেশনটিতে দেশের কোনও নাগরিক বিনা ভিসায় পৌঁছে যান, তাহলে তার বিরুদ্ধে ১৪ বিদেশি আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়। শুধু তাই নয় এই মামলায় জামিন পাওয়াও মুশকিল। এমনকী শুধু জামিন পেতেই লেগে যেতে পারে কয়েক বছর।
সাধারণত যে কোনও দেশের নাগরিকদের সেই দেশের যে কোনও রাজ্য বা জায়গার যাওয়ার অনুমতি থাকে। আলাদা করতে এর জন্য কোনও মঞ্জুরী লাগে না। নিজেদের দেশে কোথাও যাওয়ার জন্য স্বাভাবিকভাবের প্রয়োজন পড়ে না কোনও ভিসা বা পাসপোর্টও। ভিসা বা পাসপোর্ট সাধারণত কোনও দেশে বিদেশী পর্যটকদের জন্য প্রযোজ্য হয়। কিন্তু যদি বলা হয় ভারতে এমন একটি জায়গা আছে যেখানে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট এবং ভিসার প্রয়োজন হয়, তাহলে আপনি চমকে উঠতে পারেন। আরও বেশি চমকাতে পারেন যদি শোনেন যে ভারতে অবস্থিত এই জায়গায় যেতে হলে প্রয়োজন হয় পাকিস্তানের ভিসার!
শুনতে আবাক লাগলেও এ কথা ১০০ শতাংশ সত্যি। ভারতে এমন একটি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে, যেখানে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন হয় পাসপোর্ট এবং ভিসার। যদি আপনি এই স্টেশনে বিনা ভিসায় ধরা পড়েন তাহলে আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। এই স্টেশনটি দেশের একমাত্র স্টেশন যেখানে ভিসা থাকা অনিবার্য। এই রেলওয়ে স্টেশনের নাম আটারি, যেখানে যাওয়ার জন্য পাকিস্তানের ভিসা থাকা অনিবার্য। এই স্টেশন থেকে দেশের সবচেয়ে ভিভিআইপি ট্রেন ‘সমঝোতা এক্সপ্রেস’-কে সবুজ সিগন্যাল দেওয়া হয়। পাশাপাশি ট্রেন ছাড়ার জন্য নেওয়া হয় যাত্রীদের অনুমতিও।
দেশের এই রেল স্টেশনটি কড়া সুরক্ষা বলয়ে ঘেরা থাকে। আটারি স্টেশনে ২৪ ঘণ্টা থাকে ত্রিস্তরীয় সুরক্ষা। এছাড়াও ২৪টি গোপন সুরক্ষা এজেন্সি এই স্টেশনের উপর সর্বদা নজর রেখে চলে। যদি এই স্টেশনটিতে দেশের কোনও নাগরিক বিনা ভিসায় পৌঁছে যান, তাহলে তার বিরুদ্ধে ১৪ বিদেশি আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়। শুধু তাই নয় এই মামলায় জামিন পাওয়াও মুশকিল। এমনকী শুধু জামিন পেতেই লেগে যেতে পারে কয়েক বছর।
এটি এমনই একটি রেলওয়ে স্টেশন যেখানে কুলিদেরও যাওয়া নিষিদ্ধ। যাত্রীদের নিজেদের জিনিসপত্র নিজেদেরই বহন করতে হয়। তবে জিনিসপত্র তোলার জন্য থাকে স্পেশান ট্রলি। এই স্টেশনের ওয়েটিং রুমে এলইডি টিভিতে সর্বক্ষণ চালানো হয় দেশভক্তির গান। আর এখানকার খাবার দাবারও এমন যে আপনি একবার চেখে দেখলে তার স্বাদ জীবনেও ভুলবেন না। এই রেলওয়ে স্টেশনের প্রতিটি মুহূর্তের খবর রেলওয়ের প্রধান কার্যালয়ের (বরোদা হাউস, দিল্লি) কাছে থাকে। এই স্টেশনের সুরক্ষায় ২৪ ঘন্টা সেনা মজুত থাকে। যদি এই স্টেশনে কোনও কারণে ট্রেন লেট হয়, তাহলে ভারত পাকিস্তান দুই দেশের রেজিস্টারে স্বাক্ষর করতে হয়।
আরও পড়ুন: Dinhata By Election 2021: ওঁরা থাকেন ওপারে… উন্নয়ন চেয়ে কাঁটাতার পেরিয়ে ভোট দিলেন কয়েকশো মানুষ