প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন। অফিস ট্যুর বা কেবল ঘুরতে যাওয়া বা চিকিৎসার কারণেও এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে বা দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য ট্রেনই অনেকের কাছে একটি মাধ্যম। আর সেই ট্রেনের সময় এবং কোন স্টেশনে রয়েছে সেই ট্রেন, এইসব জানা জরুরি হয়ে থাকে। তার জন্য ইতিমধ্যেই বহু অ্যাপ বাজারে রয়েছে। তবে সেখানে ট্রেনের অবস্থান যথার্থ দেখানো হত না। ট্রেন রয়েছে এক স্টেশনে আর অ্যাপে দেখাত অন্য জায়গায়। এবার সেই ধন্দ থেকে মিলবে মুক্তি। কখন, কোন স্টেশনে আপনার স্টেশন রয়েছে তা খুব সহজে জানা যাবে। এবং ট্রেনের সেই অবস্থান যথার্থই হবে। যাত্রীদের সুবিধার্থে ভারতীয় রেলওয়ের তরফে নেওয়া হয়েছে নয়া উদ্যোগ। ভারতীয় রেলওয়ে তৈরি করেছে রিয়্যাল টাইম ট্রেন ইনফরমেশন সিস্টেম (Real Time Train Information System)। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO)-র সঙ্গে যৌথভাবে এই পরিকল্পনা নিয়েছে।
শুক্রবার রেলমন্ত্রকের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘ISRO-র সঙ্গে সহযোগিতায় রিয়্যাল টাইম ট্রেন ইনফরমেশন সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে। স্টেশনগুলিতে ট্রেন চলাচলের সময় পাওয়ার জন্য লোকোমোটিভগুলিতে এই RTIS ইনস্টল করা হচ্ছে। যার ফলে ট্রেনের পৌঁছনো ও স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার সময়ও জানা যাবে।’ ISRO-র সঙ্গে সহযোগিতায় তৈরি এই বিশেষ যন্ত্রটি দেশের মোট ৫০ টি লোকেশনে ছড়িয়ে থাকা মোট ৬ হাজারটি ইঞ্জিনে বসানো হচ্ছে। এর আগেই ২১ টি ইলেকট্রিক লোকোশেডে ২৭০০ টি লোকোমোটিভ বা ট্রেনে বসানো হয়ে গিয়েছে। মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ট্রেনের গতিবিধি সম্বন্ধে ৩০ সেকেন্ড অন্তর অন্তর এই সিস্টেমটি আপডেট দেবে। মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘কোনও ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপ ছাড়াই এখন আরটিআইএস ইনস্টল করা ট্রেনের অবস্থান ও ট্রেনের গতিবেগ আরও কাছ থেকে জানা যাবে।’
বর্তমানে ৬৫০০ টি লোকোমোটিভ থেকে জিপিএস ফিড সরাসরি কন্ট্রোল অফিস অ্যাপ্লিকেশনে (COA) পাঠানো হয়। এর ফলে COA ও NTES-র মাধ্যমে যাত্রীদের কাছে ট্রেনের চার্ট পৌঁছে যায়। ট্রেনের গতিবিধি নিয়ে বাজারে যেসব অ্যাপ রয়েছে তারা কন্ট্রোল অফিস অ্যাপ্লিকেশন থেকেই তথ্য সংগ্রহ করে। তবে এতদিন এই পদ্ধতিতে বিভিন্ন ত্রুটি দেখা গিয়েছিল। তাই ট্রেন এক স্টেশনে থাকলে অন্য স্টেশনে থাকার আপডেট দিত। তবে প্রাক্তন রেলমন্ত্রী পীষূষ গয়ালের হাত ধরে সেই ত্রুটি শুধরে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। তখন বেশ কয়েকটি ট্রেনে এই যন্ত্র বসানো হয়েছিল। এবার দ্বিতীয় ধাপে ৬ হাজার ইঞ্জিনে এই যন্ত্র বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। এবার থেকে ট্রেনের সঠিক অবস্থান সম্বন্ধে জানতে পারবেন যাত্রীরা।