নয়া দিল্লি: মঙ্গলবার (৭ জুন), এই নিয়ে চলতি আর্থিক বছরে দ্বিতীয়বারের মতো ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস সংশোধন করল বিশ্বব্যাঙ্ক। গত এপ্রিল মাসে বিশ্বব্যাঙ্ক বলেছিল চলতি আর্থিক বছরে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি পেতে পারে ৮ শতাংশ। এদিন, তা আরও কমিয়ে বিশ্বব্যাঙ্ক পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে ভারতের জিডিপি বাড়তে পারে মাত্র ৭.৫ শতাংশ। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, সরবরাহ শৃঙ্খলের ব্যাঘাত এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণেই জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস আরও কম করা হল বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। বিশ্বব্যাংক গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস-এর সর্বশেষ সংস্করণে বলা হয়েছে, ‘ভারতে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে মহামারি থেকে অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের বিঘ্ন ঘটার কারণে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে বৃদ্ধি ৭.৫ শতাংশে নেমে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে’।
২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি ৮.৭ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাঙ্ক। গত এপ্রিলে, সেই আর্থিক পূর্বাভাস সংশোধন করে বিশ্বব্যাঙ্ক বলেছিল, ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি হতে চলেছে ৮ শতাংশ। এদিন তা আরও কমিয়ে ৭.৫ শতাংশ করা হল। তবে এখানেই শেষ নয়, বিশ্বব্যাঙ্কের অনুমান, ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২০২৩-২৪ সালে আরও কমে ৭.১ শতাংশে নেমে যাবে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালের প্রথমার্ধে ভারতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়েছে মূলত দুটি কারণে – কোভিড-১৯ সংক্রমণের বৃদ্ধির ফলে জারি করা বিধিনিষেধ এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ।
তবে, প্রতিবেদন অনুসারে বেকারত্বের হার প্রাক-মহামারির স্তরে ফিরে গিয়েছে। তবে, শিল্পক্ষেত্রে কর্মীদের অংশগ্রহণের হার প্রাক-মহামারি স্তরের নীচেই রয়ে গিয়েছে। কর্মীরা কম বেতনের চাকরি নিতে বাধ্য হচ্ছেন। একই সময়ে পরিকাঠামোর উন্নয়ন বিনিয়োগের দিকে মন দিয়েছে সরকার। শ্রম সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন সরল করা হচ্ছে। অলাভজনক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্পদগুলির বেসরকারীকরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি ভারতের লজিস্টিক সেক্টর আরও আধুনিক এবং সংহত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক।
তবে শুধু বিশ্বব্যাঙ্কই নয়, বিশ্বর অন্যান্য বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষক সংস্থাও ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস সংশোধন করে কমিয়েছে। গত মাসেই, মুডি’স ইনভেস্টর সার্ভিস উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির উল্লেখ করে, ২০২২-২৩ সালের জন্য জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৯.১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮.৮ শতাংশে নামিয়ে এনেছিল। এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল রেটিংস ২০২২-২৩-এও ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস আগের ৭.৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭.৩ শতাংশ করা হয়েছে। ইন্ট্রন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড বা আইএমএফ-ও ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮.২ শতাংশ করেছে। আরবিআই-ও গত এপ্রিল মাসে জিডিপি বৃদ্ধর পূর্বাভাস ৭.৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭.২ শতাংশ করেছিল।