H3N2 Influenza Deaths: ‘হংকং ফ্লু’-তে প্রথম মৃত্যু ভারতে, ক্রমেই ভয়াল রূপ H3N2 ভাইরাসের
H3N2 Influenza Deaths: ভারতে ক্রমে ভয়াল রূপ ধারণ করছে এইচ৩এন২ (H3N2) ভাইরাস ঘটিত ইনফ্লুয়েঞ্জা বা 'হংকং ফ্লু'। এই প্রথম এই রোগে মৃত্যুর সাক্ষী হল দেশ। শুক্রবার, জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
নয়া দিল্লি: ভারতে ক্রমে ভয়াল রূপ ধারণ করছে এইচ৩এন২ (H3N2) ভাইরাস ঘটিত ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ‘হংকং ফ্লু’। এই প্রথম এই রোগে মৃত্যুর সাক্ষী হল দেশ। শুক্রবার, জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। হরিয়ানার এক ব্যক্তির পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে কর্নাটকের এক ৮২ বছর বয়সী বৃদ্ধেরও। হাসান জেলার বাসিন্দা হিরে গৌড়াকে ২৪ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল, ১ মার্চ তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্তারা। তবে, ওই ব্যক্তির ডায়াবেটিস এবং হাইপারটেনশনের মতো সহঅসুস্থতা ছিল। এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে এইচ৩এন২ ভাইরাস সংক্রমণের ৯০টি ঘটনার কথা জানা গিয়েছে। পাশাপাশি ৮টি ক্ষেত্রে সন্ধান মিলেছে এইচ১এন১ (H1N1) ভাইরাস সংক্রমণের। অতীতে ভারতে এইচ৩এন২ ভাইরাসের প্রভাবে বেশ কয়েকটি ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারি ঘটেছে।
ভারতে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস
বস্তুত, গত কয়েক মাস ধরে গোটা দেশেই ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ বাড়ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীরা এইচ৩এন২ ভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ঘটায় যে ভাইরাসগুলি, তার মধ্যে সবথেকে বিপজ্জনক হল এই এইচ৩এন২ ভাইরাস সাবটাইপটি। এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ফ্লু রোগীদের অধিকাংশকেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং মৃত্যুর সম্ভাবনাও বেশি থাকে। ভারতে এখনও পর্যন্ত ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ভাইরাসের দুটি সাবটাইপ পাওয়া গিয়েছে – এইচ৩এন২ এবং এইচ১এন১। দুটি ভাইরাস সাবটাইপ সংক্রমণের ক্ষেত্রেই কোভিড-১৯-এর মতো উপসর্গ দেখা যায়।
এইচ৩এন২ ভাইরাস কী?
এটি একটি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, সাধারণত শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। মানুষের পাশাপাশি পাখি এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীও এই ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হতে পারে। পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীদের শরীরে প্রবেশ করার পর, এই ভাইরাসটির বেশ কয়েকবার রূপান্তর ঘটেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণের ফলে শ্বাসযন্ত্রের জ্বর এবং কাশি হয় এবং তা থেকে দ্রুত গুরুতর নিউমোনিয়া, তীব্র শ্বাসকষ্ট, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
এইচ৩এন২ ভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ
সর্দি, কাশি, জ্বর, বমি বমি ভাব, বমি, গলা ব্যথা, পেশী এবং শরীরে ব্যথা, ডায়েরিয়া, হাঁচি, নাক দিয়ে জল পড়া ইত্যাদি।
কীভাবে ছড়ায় এই ভাইরাস?
এইচ৩এন২ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক। সংক্রামিত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি বা তিনি কথা বলার সময় যে তরলের ফোঁটা নির্গত হয়, সেগুলি থেকেই অন্য ব্যক্তিতে সংক্রামিত হতে পারেন। কোনও পৃষ্ঠে যদি ভাইরাসটি ছড়িয়ে থাকে এবং সেই পৃষ্ঠে হাত দেওয়ার পর যদি কেউ সেই হাত তার মুখ বা নাকে লাগায়, তাহলেও ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কি কি সতর্কতা নিতে হবে?
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভাইরাসটি যেহেতু মূলত শ্বাসযন্ত্রে হামলা করে, তাই এই ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করতেও কোভিডের মতোই সতর্কতা নেওয়া উচিত। পালস অক্সিমিটারের সাহায্যে ক্রমাগত রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। অক্সিজেনের ঘনত্বের মাত্রা ৯৫ শতাংশের কম হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। অক্সিজেনের ঘনত্ব ৯০ শতাংশের কম হলে আইসিইউতে ভর্তি করতে হতে পারে। ডাক্তার না দেখিয়ে নিজে নিজে ওষুধ খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।