নয়া দিল্লি: ভারতের উড়ান সংযোগ বাড়াতে একের পর এক বিমানবন্দর তৈরি করছে মোদী সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, তাঁর সরকার দেশের বিমানবন্দরের সংখ্যা ২০০-তে নিয়ে যেতে চান। গোটা দেশকে বিমানবন্দরের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মুড়ে ফেলতে চান। আর এই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার অন্যতম নয়ডার জেওয়ার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। দিল্লি রাজধানী এলাকার মধ্যে নির্মীয়মাণ এই বিমানবন্দর প্রধানমন্ত্রী মোদী সরকারের পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের শীর্ষে রয়েছে। তৈরি হয়ে গেলে এই বিমানবন্দর দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের চাপ অনেকটাই কমিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর এই নতুন বিমানবন্দরে দেখা যাবে ভারতের প্রথম ‘পড ট্যাক্সি’ পরিষেবা। ড্রাইভারহীন এই পরিষেবার পোশাকি নাম ‘পার্সোনাল র্যাপিড ট্রান্সপোর্ট’ বা ‘পিআরটি’ (PRT)। নয়ডার ফিল্ম সিটি থেকে জেওয়ার বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ১৪.১ কিলোমিটার পথের মধ্যে এই নয়া যাত্রী পরিবহণ ব্যবস্থা চালু করা হবে। খরচ পড়বে ৮১০ কোটি টাকা। গৌতম বুদ্ধ নগর জেলার ২৮, ২৯, ২১ এবং ৩২ নম্বর সেক্টরের মধ্য দিয়ে যাবে এই পড ট্যাক্সি।
পড ট্যাক্সি কি?
পড ট্যাক্সি হল এক ধরনের চালকবিহীন বৈদ্যুতিক যানবাহন। ছোট ছোট স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, যার মাধ্যমে হাতে গোনা কয়েকজন যাত্রী এক জায়গা থেকে অন্যত্র দ্রুত গতিতে যেতে পারবেন। ট্রেন বা ট্রামের মতো এই ছোট গাড়িগুলি একটি ট্র্যাক ধরে চলে। ওই ট্র্যাকের মাধ্যমেই গাড়িতে বিদ্যুত সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়। এই ট্র্যাকগুলি অবশ্যই নিয়মিত রাস্তায় থেকে আলাদাভাবে তৈরি করা হচ্ছে। কাজেই পড ট্যাক্সিগুলির জন্য বাস-গাড়ি-মোটরসাইকেল ইত্যাদির মতো নিয়মিত যানবাহনগুলির রাস্তা আটকাবে না। পাশাপাশি, পড ট্যাক্সিতে করে গেলে, যাত্রীদেরও যানজটের সমস্যায় পড়তে হবে না। সময়ে বিমানবন্দরে না পৌঁছনোর ভাবনা দূর হবে সাধারণ মানুষের। আর বৈদ্যুতিক যানবাহন বলে, এই পরিবহণ ব্যবস্থা পরিবেশ-বান্ধবও বটে। বর্তমানে দুবাই, সিঙ্গাপুর এবং লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে পড ট্যাক্সি পরিষেবা রয়েছে।
গৌতম বুদ্ধ নগরের জেওয়ার বিমানবন্দরে এই পরিষেবা চালু হলে, উত্তরপ্রদেশই হবে ভারতের প্রথম রাজ্য, যেখানে এই আন্তর্জাতিক মানের পরিবহণ ব্যবস্থা পাওয়া যাবে। আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে নয়া দিল্লির অদূরে নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির মাধ্যমে প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ কোটি যাত্রীর উড়ান যাত্রার চাহিদা পূরণ হবে বলে আশা করছে অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক। কাজেই, এই বিপুল পরিমাণ যাত্রীকে বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই পড ট্যাক্সি পরিষেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। আসলে, বর্তমানে গোটা বিশ্বের মধ্যে ভারতেই বিমানযাত্রীর সংখ্যা সবথেকে দ্রুত বাড়ছে। গত এক দশকে দেশের অসামরিক বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। ফলে উড়ানের টিকিটের দামও কমেছে। একই সঙ্গে উন্নতি হয়েছে সাধারণ মানুষের আর্থিক অবস্থারও। যার ফলে, লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে বিমানযাত্রীর সংখ্যাও। এই অবস্থায়, উড়ান পরিকাঠামোর উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে মোদী সরকার।