ইন্দোর: মোবাইলে গেম (Mobile Games) খেলতে কারই বা ভাল লাগে না। আর সেই গেম খেলেই যদি টাকা উপার্জন করা যায়, তবে তো সোনায় সোহাগা। কিন্তু এই গেমই যে বিপদ ডেকে আনবে, তা আন্দাজও করতে পারেনি বছর ২৫-র জিতেন্দ্র। পড়াশোনার ফাঁকেই সে চেয়েছিল সহজে অর্থ উপার্জন করতে। কিন্তু পড়ুয়া হওয়ায় চাকরি পেতেও সমস্যা হচ্ছিল। এইসময়ই টিভিতে, ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন দেখেছিল যে অনলাইন গেম (Online Game) খেলেও লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করা সম্ভব। সেই মতোই গেম খেলতে শুরু করে। দ্রুত টাকা উপার্জনের জন্য চেনাশোনা মানুষ, বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকেও টাকা ধার নেয় সে। কিন্তু অনলাইন গেমও ভাগ্য ফেরাল না। শেষ অবধি টাকা মেটাতে না পেরে কলেজের হস্টেলেই আত্মহত্যা (Suicide) করল ওই পড়ুয়া।
মঙ্গলবার ইন্দোরের ইন্দ্রপুরী হস্টেল থেকে উদ্ধার করা হয় জিতেন্দ্র ভাস্কলের ঝুলন্ত দেহ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে সকলে যখন ঘুমিয়ে পড়েছিল, সেই সময়ই হস্টেলের সিড়ির রেলিং থেকে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে ওই যুবক। জিতেন্দ্রের পকেট উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোট থেকেই জানা যায়, অনলাইনে গেম খেলার জন্য যে টাকা ধার নিয়েছিল সে, তা শোধ করতে না পারায় আত্মহত্যা করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জিতেন্দ্রর পরিবার মহারাষ্ট্রে থাকে। কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা করতেই ইন্দোর এসেছিল জিতেন্দ্র। তবে পরিবারের আর্থিক কষ্ট থাকায় সে সবসময়ই টুকিটাকি কাজ করে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করত। সম্প্রতি এক জায়গায় রাতে নিরাপত্তারক্ষীর কাজেও যোগ দিয়েছিল বছর ২৫-র ওই যুবক।
এদিকে, বন্দুবান্ধবদের কাছ থেকে শুনে এবং নানা জায়গায় বিজ্ঞাপন দেখেই সে জানতে পেরেছিল যে অনলাইনে বিভিন্ন অ্যাপে গেম খেলেও অর্থ উপার্জন করা যায়। এই কথা শোনার পরই জিতেন্দ্রও গেম খেলা শুরু করে। তবে সেই গেম খেলতেও টাকার প্রয়োজন ছিল। দ্রুত অর্থ উপার্জনের লোভে পরিচিতদের কাছ থেকে টাকা ধার নিতে শুরু করে সে, কিন্তু কোনওবারই গেমে জিততে পারেনি। গেম খেলেও টাকা না জিততে পারায় এবং ঋণের বোঝা বাড়তে থাকার কারণেই সোমবার রাতে অবসাদে আত্মহত্যা করে ওই পড়ুয়া।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ধার নেওয়া টাকা মেটাতে না পারার কারণেই আত্মহত্যা করেছে জিতেন্দ্র, এ কথা সুইসাইড নোটে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কত টাকা ধার নিয়েছিল এবং কাদের থেকে টাকা নিয়েছিল, সে কথা উল্লেখ করা নেই সুইসাইড নোটে। কেউ ওই যুবকের উপর টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।