নয়া দিল্লি: ভূস্বর্গ বরাবরই জঙ্গিদের নিশানা হয়ে এসেছে। মাঝে কয়েক বছর শান্তি ফিরলেও সম্প্রতি ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জঙ্গি সমস্যা (Terrorist Issue)। একের পর এক সাধারণ নাগরিককেই খুন করছে জঙ্গিরা। এই পরিস্থিতিতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গেল গোয়েন্দা রিপোর্টে (Intelligence Report)। সূত্রের দাবি, জম্মু-কাশ্মীরে (Jammu kashmir) বর্তমানে কমপক্ষে ৩৮ জন পাকিস্তানি জঙ্গি (Pakistani Terrorist) লুকিয়ে রয়েছে।
শুক্রবারই কেন্দ্রের কাছে জমা পড়ে একটি গোয়েন্দা রিপোর্ট, তাতেই এই চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী ইতিমধ্যেই সন্দেহজানক বেশ কয়েকজনের উপরে নজরদারি করছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের দাবি, আজই গোয়েন্দা বাহিনীর তরফে ৩৮ জনের একটি নামের তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। এরা সকলেই পাকিস্তানি এবং বর্তমানে কাশ্মীরেই লুকিয়ে রয়েছে তারা।
সূত্রের আরও দাবি, এই ৩৮ জন পাক জঙ্গির মধ্যে ২৭ জন লস্কর-ই-তৈবার সদস্য এবং বাকি ১১ জন জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি গোষ্ঠী দ্বারা প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। এদের মধ্যে ৪ জন জঙ্গি শ্রীনগরে, ৩ জন কুলগামে লুকিয়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও পুলওয়ামা ও বারামুল্লাতেও ১০ জন করে জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে। ১১ জন জঙ্গি কাশ্মীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে লুকিয়ে রয়েছে।
উপত্যকায় বসবাসকারী মদতদাতা, যারা ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কার নামেই পরিচিত, তাদের সাহায্যেই জঙ্গিরা বারংবার নিরাপত্তা বাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেরাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। গোয়েন্দা বাহিনীর ওই রিপোর্টে আরও জানা গিয়েছে যে, পাকিস্তানি জঙ্গিরাই অন্যান্য জঙ্গিদেরও লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করছে। পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর উপর সাম্প্রতিক যে হামলাগুলি হয়েছে, তাতেও পাক জঙ্গিরা মদত দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, জম্মু-কাশ্মীরে উপস্থিত পাক জঙ্গিরা অল্পবয়সী ছেলে মেয়েদেরও ভুল বুঝিয়ে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়ানোর চেষ্টা করছে এবং বেশ কিছু জায়গায় গোপনে সদ্য যোগ দেওয়া জঙ্গিদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। মূলত তাদের দিয়েই গ্রেনেড হামলা , সাধারণ মানুষ বা নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা চালানো হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, জঙ্গি উপস্থিতির খবর পেতেই আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরিকল্পনা শুরু করা হয়েছে। একইসঙ্গে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের উপর নজরদারিও চালানো হচ্ছে। পাক জঙ্গিরা ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই জানানো হয়েছে।
সম্প্রতিই কাশ্মীরে সাধারণ নাগরিকের উপর একের পর এক যে প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়েছে, তারপর থেকেই উপত্যকায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা রয়েছেন। নিয়মিত সেখানে তল্লাশি অভিযানও চালাচ্ছে এই দুই সংস্থা, এমনটাই সূত্রের খবর।
এনআইএ-র তরফে এখও অবধি ৩০ জনের বেশি জঙ্গি ও তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদের মধ্যে লস্কর-ই-তৈবা, হিজবুল মুজাহিদ্দিন, আল বাদর সহ একাধিক জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যরা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফেও উপত্যকায় জঙ্গি হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমানে নিয়মিত তল্লাশি অভিযান ও নিরাপত্তা বাহিনীর টহল ছাড়াও আকাশপথে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও উপত্যকা জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় যে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলি বসানো রয়েছে, নিয়মিত তার ফুটেজও দেখা হচ্ছে। ২৫ কোম্পানি বিএসএফ ও ২৫ কোম্পানি সিআরপিএফ বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Indian Railway: বড়সড় বিপদ থেকে রক্ষা! পাথর পড়ে লাইনচ্যুত কান্নুর বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেস ট্রেন