পটনা: বিহারের রাজনীতিতে ঘটবে বড় বদল? নীতীশ কুমারের বদলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র তেজস্বী যাদব? গত কয়েকদিন ধরেই এই ধরনের একটা গুজব শোনা যাচ্ছে বিহারের রাজনৈতিক মহলে। বিশেষ করে, জেডিইউ-এর সর্বভারতীয় সভাপতি পদ থেকে রাজীব রঞ্জন সিং ওরফে লালন সিং-এর সরে যাওয়া এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সেই পদে আসার পর এই গুঞ্জন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। লালন সিং এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে এই আলোচনা বন্ধ করতে চেয়েছেন ঠিকই, কিন্তু, বিহারের শাসক জোটের অন্দরে বড় অবিশ্বাসের পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যা সামগ্রিকভাবে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে ইন্ডিয়া জোটের উপরও, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈচিক বিশ্লেষকরা।
সদ্য, জেডি (ইউ) দলের সর্বভারতীয় সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন লালন সিং। তারপর থেকেই, জিতনরাম মাঝি-সহ রাজ্যের বিজেপি নেতারা দাবি করা শুরু করেছেন, লালু যাদব এবং তেজস্বী যাদবের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে নীতীশকে সরাতে চেয়েছিলেন লালন সিং। তাঁর বদলে তেজস্বী যাদবকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন। এর জন্য জেডি (ইউ)-এর সিংহভাগ বিধায়ককে ভাঙিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। এই সকল জল্পনার মধ্যেই রবিবার থেকে লালুপ্রসাদের বাড়িতে বাড়তি রাজনৈতিক তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া সফর বাতিল করে পটনায় ফিরে এসেছেন তেজস্বী। লালুর সঙ্গে দেখা করেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষও। গভীর রাত পর্যন্ত দলের বিধায়কদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন লালুপ্রসাদ।
সব মিলিয়ে বিহারের শাসক জোটের অন্দরে এক গভীর অবিশ্বাসের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আর এর আঁচ পড়তে পারে ইন্ডিয়া জোটেও। ইন্ডিয়া জোটের প্রথম বৈঠক হয়েছিল পটনাতেই। আসলে এই জোটের পিছনের ধারণাটিই দিয়েছিল ‘বিহার মডেল’। বিহারে, বিরোধী দলগুলি নিজেদের মধ্যে যে ব্যবধান রয়েছে, তা সরিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ে বিজেপিকে রুখে দিয়েছিল। সেই কৌশলকেই জাতীয় স্তরে প্রয়োগ করতে চেয়েছিল বিরোধী দলগুলি। এই পরিস্থিতিতে বিহার মডেলই যদি না টেকে, সেই ক্ষেত্রে ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। পারস্পরিক রাজনৈতিক বিরোধ সত্ত্বেও, জোট গড়ে ইন্ডিয়ার শরিকরা আদৌ স্থিতিশীল সরকার দিতে পারবে কিনা, ভোটারদের মনেও এই সংশয় তৈরি হবে।