নয়া দিল্লি : বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলকে সর্বভারতীয় স্তরে প্রতিষ্ঠা করতে তৎপর হয়েছে। নির্বাচনের পর প্রথমবার দিল্লি সফরে গিয়ে সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২৪-কে পাখির চোখ করে বিজেপি বিরোধী জোটের বার্তা নিয়েই দিল্লি গিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু সম্প্রতি তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের যে দূরত্ব চোখে পড়ছে, তাতে তৃণমূল বন্ধু হারাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নই তুলছে রাজনৈতিক মহল।
শীতকালীন অধিবেশনের শুরু থেকেই দেখা যাচ্ছে বিরোধীদের নিয়ে কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে নেই তৃণমূল। অথচ যে দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে জোটের বার্তা দিচ্ছে তৃণমূল, তারা নিয়মিত যাচ্ছে সেই বৈঠকে।
সেখান থেকেই প্রশ্ন উঠছে, তৃণমূল কি ক্রমশ বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে? রাজ্য ও দেশের রাজনীতিতে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শেষের কয়েক দিনে চোখ রাখতে হবে। বিরোধিতায় সঙ্গে আছে, কিন্তু কোনও পার্টি চালিত বিরোধিতায় নেই তৃণমূল। বাকি দলগুলি এই পন্থায় নারাজ।
দেখা যাচ্ছে, ১২ জন সাংসদের সাসপেনশন ছাড়া আর সব বিষয়েই তৃণমূল একা। যে দিন মুম্বইতে মমতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, সে দিনই তাঁর মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে মল্লিকার্জুন খাড়গের ডাকা বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন দিল্লিতে। অথচ তৃণমূল সেই বৈঠক বয়কট করে। মঙ্গলবার রাতে মমতা উদ্ধব ঠাকরের ছেলে আদিত্য ঠাকরে ও শিব সেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতের সঙ্গে দেখা করেন মুম্বাইতে। আবার সেই দিনই সেনার থেকে খাড়গের ডাকা বৈঠকে থাকেন সেনার প্রতিনিধি।
আসলে প্রথা অনুযায়ী, সবথেকে বড় বিরোধী দলের থেকে বিরোধী দলনেতা বেছে নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে যেমন বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গে। আর তাঁর বৈঠকে অন্যান্য বিরোধী দল যাবে, এটাই রাজনীতির ট্র্যাডিশন। কিন্তু সেখান থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছে তৃণমূল।
সংসদের প্রথম দিন যখন সব প্রধান বিরোধী দল ওয়াক আউট করে, ১২ জন সাংসদদের সাসপেনশনে বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে, ঘাসফুল সাংসদরা প্রায় একাই বসে থাকে বিরোধী বেঞ্চে। বুধবার রাতে মুখ্যমন্ত্রীর চমকে দেওয়া ‘UPA আর নেই’ মন্তব্যও বিরোধীরা ভালো ভাবে নেন নি। কংগ্রেসের পক্ষে সম্ভবত মমতার এই মন্তব্য একটা ধাপ ছিল যার পরে রাজনৈতিক শালীনতা বজায় রাখার আর কোনও কারণ তারা মনে করে নি।
তবে তৃণমূল এখনও তার নীতিতে অনড়। তাদের দাবি, তারা ইস্যুকে সামনে রেখে কাজ করতে চায়, কোনও দলের নেতৃত্বে নয়। দলের সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন জানিয়েছেন, বিরোধিতার জন্য কোনও ইস্যু সামনে এলে তাঁরা অবশ্যই বিরোধিতা করবেন, কিন্তু কোনও বিশেষ দলের ডাকে বিরোধিতা করবেন না। তবে সব মিলে ঘুরে ফিরে সেই একই প্রশ্ন সামনে আসছে, তাহলে কি এবার বাংলা জয়ের দম্ভে তৃণমূল সত্যিই বন্ধু বিহী
আরও পড়ুন : Blast in Nodakhali: ‘জেএমবি জঙ্গি ও জেহাদিদের আঁতুড়ঘর, নোদাখালি বিস্ফোরণে তদন্ত করুক NIA’