নয়া দিল্লি: স্বাধীনতা দিবসের মাত্র কয়েকদিন আগে রাজধানী দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হল এক আইএসআইএস জঙ্গিকে। রবিবার (৭ জুলাই) ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি জানিয়েছে, শনিবার নয়া দিল্লিতে তার বাসভবন থেকেই গ্রেফতার করা হয় ওই ইসলামিক স্টেটের সক্রিয় সদস্যকে। এনআইএ-র দাবি ভারতের পাশাপাশি বিদেশ থেকেও সে বিভিন্ন জঙ্গি সমর্থকদের কাছ থেকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের জন্য তহবিল সংগ্রহ করত। শুধু তাই নয়, ওই তহবিল সে ক্রিপ্টোকারেন্সির আকারে সিরিয়া এবং আইএসআইএস-এর প্রভাবাধীন অন্যান্য দেশে পাঠাতো।
রবিবার, এনআইএ জানিয়েছে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম মহসিন আহমেদ। দক্ষিণ দিল্লির ওখলার জামিয়া নগর এলাকার বাটলা হাউসের বাসিন্দা সে। তবে আদতে সে বিহারের পটনার বাসিন্দা। চলতি বছরের ২৫ জুন, এই বিষয়ে এনআইএ একটি সুয়োমোটো মামলা নথিভুক্ত করেছিল।
এদিন, তদন্তকারী সংস্থাটির পক্ষ থেকে এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গতকাল (০৬.০৮.২০২২), এনআইএ অভিযুক্ত মহসিন আহমেদের আবাসিক প্রাঙ্গনে তল্লাশি অভিযান চালায়। বর্তমানে সে নয়া দিল্লির বাটলা হাউসের জোগাবাই এক্সটেনশনের কাছে থাকে। তবে সে বিহারের পাটনার স্থায়ী বাসিন্দা। পরবর্তীতে তাকে অনলাইন সংক্রান্ত মামলায় এবং আইএসআইএস-এর অন-গ্রাউন্ড কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।” এই মামলার বিষয়ে আরও তদন্ত করা হচ্ছে।
এনআইএ আরও জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া আইএসআইএস সদস্য মহসিন আহমেদের কার্যকলাপ ছড়িয়ে ছিল উত্তরপ্রদেশ এবং কর্ণাটকেও। সূত্রের খবর, প্রাথমিক জেরায় তদন্তকারীদের সে জানিয়েছে, ভারতের বিভিন্ন জায়গায় নাশকতামূলক হামলা চালানো তার উদ্দেশ্য ছিল। এনআইএ-র জেরায় সে আরও দুই সন্দেহভাজনের নাম জানিয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে।
এই সন্দেহভাজনদের আটক ও জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি, এনআইএ-র পক্ষ থেকে ওয়াজিরগঞ্জ এক্সচেঞ্জ, গয়ার ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ থেকে রেকর্ডও তলব করেছে এনআইএ। এক্সচেঞ্জগুলির মাধ্যমে কতগুলি ক্রিপ্টোকারেন্সি পাঠানো হয়েছে, কখন এবং কোথায় পাঠানো হয়েছে, সেই সব বিষয়ে তথ্য চেয়েছেন তদন্তকারীরা। ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান-সহ বিদেশে কোথায় কত ক্রিপ্টোকারেন্সি পাঠানো হয়েছে সেই বিষয়েও অনুসন্ধান করা হবে। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই ওয়াজিরগঞ্জ এক্সচেঞ্জে অভিযান চালিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট ।
বস্তুত, এর আগেই এনআইএ-র তদন্তে জানা গিয়েছিল রীতিমতো একটি শৃঙ্খলে সন্ত্রাসবাদে তহবিল প্রদান করা হচ্ছে। সেই শৃঙ্খল ছিন্ন করার উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল এনআইএ। জম্মু ও কাশ্মীরে তদন্ত করতে গিয়ে তারা দেখছিল, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদে তহবিল প্রদান করা হচ্ছে। ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেনে জড়িত সন্দেহে, চলতি মাসের শুরুতেই কাশ্মীর এবং জম্মু বিভাগের সাতটি আবাসিক চত্বরে অভিযান চালিয়েছিল এনআইএ। সেই সময়ই এনআইএ-র এক সূত্র জানিয়েছিল, বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে ইন্ধন জোগাতে আইএসআই এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন জড়িত রয়েছে।