নয়াদিল্লি: গতকালই খবর এসেছিল। স্পিতি ভ্যালিতে ট্রেকে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার দুই যুবক। কিন্তু ওই অভিযাত্রী দলের ১৪ জন এখনও আটকে রয়েছেন পাহাড়ের কোলে। তাঁদের উদ্ধার করতে ইতিমধ্যেই অভিযান শুরু করেছেন ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশের জওয়ানরা।
আইটিবিপি জওয়ান, সেনা এবং স্থানীয় প্রশাসনের তরফে যৌথভাবে উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়েছে। প্রায় ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় আটকে রয়েছেন বাংলার ওই অভিযাত্রী দলের ১৪ জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৩ জন ট্রেকার এবং ১১ জন স্থানীয় পোর্টার।
অভিযাত্রী দলের ডেপুটি লিডার অন্য এক অভিযাত্রীর সঙ্গে উদ্ধারের সাহায্য চাইতে গতকাল আইটিবিপি ক্যাম্পে পৌঁছেছিলেন। তাঁরাই জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর মানালি থেকে অভিযান শুরু হয়েছিল। ২৫ সেপ্টেম্বর, যখন অভিযাত্রী দলটি খামেঞ্জার পাস থেকে নামছিল, তখন তাঁদের দলের ২ জন সদস্য- সন্দীপ কুমার ঠাকুরতা (৪৮) এবং ভাস্কর দেব মুখোপাধ্যায় (৬১) মাউন্টেন সিকনেসের কারণে মারা যান। দুজনেই উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘড়িয়ায় বাসিন্দা।
অভিযাত্রী দলে মোট ১৭ জন সদস্য ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৬ জন অভিযাত্রী, ১ জন শেরপা এবং ১০ জন স্থানীয় পোর্টার ছিলেন। ওই ব্যক্তি আরও জানিয়েছেন, সন্দীপ এবং ভাস্কর উভয়ের দেহই পাহাড়ের উপরে পড়ে আছে এবং অভিযানের অন্যান্য সদস্যরা সাহায্যের অপেক্ষায় রয়েছে।
আইটিবিপি জওয়ান, কাজ়ার স্থানীয় প্রশাসন এবং ওই এলাকায় মোতায়েন সেনাবাহিনীর জওয়ানরা যৌথভাবে একটি উদ্ধারকারী দল গঠন করেন। একটি উদ্ধার অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। আজ ভোর ৩ টের থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন তাঁরা। উদ্ধারকারী দলে রয়েছেন আইটিবিপির ১৭ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা, সেনার জওয়ানরা, স্থানীয় পোর্টার এবং স্থানীয় পুলিশের প্রতিনিধিরা।
পিন ভ্যালির কা গ্রাম থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। বেলঘড়িয়ার দুই অভিযাত্রীর দেহ এবং আটকে পড়া অন্যান্য অভিযাত্রী ও কুলিদের উদ্ধার করতে কয়েক দিন সময় লাগবে। উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে রয়েছে সমস্ত প্রয়োজনীয় পর্বতারোহণ সরঞ্জাম, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং অন্যান্য উদ্ধার সরঞ্জাম।
উদ্ধার অভিযানের প্রথম ধাপে কা গ্রাম থেকে চক ধর পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় ধাপ চক ধর থেকে ধর থাঙ্গো পর্যন্ত হবে। তৃতীয় পর্যায়টি হবে ধর থাঙ্গো থেকে স্পট ৫৩৫৪ পর্যন্ত। এই স্পট ৫৩৫৪-এই অভিযাত্রী দলটি আটকে আছে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে খবরে আসে হিমাচল প্রদেশ। গত ২১ জুলাই ভূমিধস নেমেছিল, তাতে লাহুল-স্পিতিতে আটকে পড়েছিলেন ২০০-র বেশি মানুষ। এরপর নতুন করে তিন যুবক, যাঁরা ট্রেকিং করতে গিয়েছিলেন, তাঁরাও নিখোঁজ হয়ে যান।
লাগাতার বৃষ্টিতে নতুন করে ধস নামে শিরমৌরে। ধসের জেরে বন্ধ হয়ে যায় জাতীয় সড়কও। ৭০৭ নম্বর জাতীয় সড়কের একটি বড় অংশ খাদে তলিয়ে যায়। ধসের জেরে সিলাই ও পাওতা সাহেব এলাকার মধ্যে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
আরও পড়ুন : Belghoria: মায়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার আগেই পাহাড়ে প্রাণ হারালেন বেলঘড়িয়ার সন্দীপ!