শ্রীনগর: বুধবার, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাসকারী যে কাউকে বসবাসের শংসাপত্র দেওয়া তথা ভোটাধিকার দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, রাজনৈতিক প্রতিবাদের মুখে, একদিনের মধ্যেই সেই আদেশ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হলেন জম্মুর ডেপুটি কমিশনার, তথা, জেলা নির্বাচন আধিকারিক অবনী লাভাসা। এর আগে অবনী লাভাসার কার্যালয় থেকে একটি আদেশ জারি করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, জম্মু জেলায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাসকারীরা ভোটার হিসেবে নিজেদের নাম নিবন্ধন করতে পারেন। আধার কার্ড, জল, বিদ্যুৎ বা গ্যাসের সংযোগ, ব্যাঙ্কের পাসবুক, পাসপোর্ট, জমির দলিলের মতো নথি বসবাসের প্রমাণ হিসেবে গ্রাহ্য করা হবে।
এই আদেশ জারির পরই জম্মু ও কাশ্মীরের মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলি এইআদেশের বিরোধিতা শুরু করেছিল। সরকারি এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছিল। বিতর্কের মুখে তড়িঘড়ি এই আদেশ প্রত্যাবার করা হল। বস্তুত, গত অগস্ট মাস থেকেই জম্মু-কাশ্মীরে বাইরে থেকে আসা ব্যক্তিবর্গের ভোটাধিকার পাওয়া নিয়ে বিতর্ক চলছে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির তৎকালীন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক হৃদেশ কুমার জানিয়েছিলেন, জম্মু কাশ্মীরের আদি বাসিন্দা না হলেও, কর্মসূত্রে বা পড়াশোনা জন্য যারা উপত্যকায় বসবাস করেন, তারাও ভোটার তালিকায় নাম নিবন্ধন করতে পারবেন। সেই সময়ই মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলি অভিযোগ করেছিল, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রকৃত বাসিন্দারা তাদের ভোট দেবে না বুঝেই, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার অস্থায়ী ভোটারদের উপর নির্ভর করতে চাইছে।
The Deputy Commissioner of Jammu withdraws the notification which authorised all tehsildars to issue certificates of residence to people residing in Jammu “for more than one year” https://t.co/KKYthj9AMj
— ANI (@ANI) October 12, 2022
২০১৮ সালের নভেম্বরে জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা ভেঙে দিয়েছিলেন, তৎকালীন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। তারপর ২০১৯ সালের অগস্টে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করা হয়েছিল। রাজ্য ভেঙে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করা হয়। চলতি বছরের মে মাসে, জম্মু ও কাশ্মীরের নির্বাচনী আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ হয়। সেই সময়ে আশা করা হয়েছিল, চলতি বছরেই জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচন করা হবে। কিন্তু, সীমানা পুনর্বিন্যাসের মতো চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশকে ঘিরেও চুড়ান্ত বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ফলে, বিধানসভা নির্বাচনের জন্য জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দাদের আরও অন্তত এক বছর অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।