ওয়াশিংটন: ‘জনধন যোজনা’, ‘পিএম কিষাণ নিধি’র মতো বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের ক্ষেত্রেই, সুবিধাভোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি অর্থ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে মোদী সরকার। মোদী সরকারের এই সরাসরি অর্থ পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনার ভুয়সী প্রশংসা করল ‘ইন্টারন্যাশনাল মানিটরি ফান্ড’ বা ‘আইএমএফ’। বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে আইএমএফ-এর ‘ফিসকাল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টে’র ডেপুটি ডাইরেক্টর পাওলো মাউরো বলেছেন, “ভারতের থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। বিশ্বজুড়ে এমন আরও কিছু উদাহরণ রয়েছে, যা থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। আমাদের কাছে প্রায় প্রতিটি মহাদেশ এবং প্রতিটি আয়ের স্তরের উদাহরণ রয়েছে। ভারতের উদাহরণ অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক।”
ভারত সরকারের এই সরাসরি অর্থ পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে, আইএমএফ ‘লজিস্টিক্যাল বিস্ময়’ বলে অভিহিত করেছে। পাওলো মাউরো বলেছেন, “নিম্ন আয়ের স্তরের মানুষদের সহায়তার জন্যই এই প্রকল্পগুলি গ্রহণ করা হয়েছে। কয়েক কোটি মানুষের কাছে, এই প্রকল্পগুলির সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হয়। প্রকৃতপক্ষে, দেশটির (ভারতের) আয়তনের কারণেই, এটা একটা লজিস্টিক্যাল বিস্ময়। কোনও কোনও প্রকল্প শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য নেওয়া হয়েছে, কোনও কোনও প্রকল্পের লক্ষ্য শুধুমাত্র প্রবীনরা অথবা কৃষকরা। সবথেকে মজার বিষয়, এই ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত আবিষ্কারকে কাজে লাগানো হয়েছে। ভারত এই ক্ষেত্রে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেমব বা আধারকে কাজে লাগিয়েছে।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, নিম্ন আয়ের অধিকংশ দেশেই এখন দেখা যাচ্ছে, মানুষের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ নেই, কিন্তু তাদের মোবইল ফোন আছে। প্রযুক্তির এই ব্যাপকতাকে কাজে লাগিয়ে ভারতের মতোই অন্যান্য অনেক দেশেও মোবাইল ব্যাঙ্কিং-এর মাধ্যমে টাকা পাঠানোর সুবিধাকে দারুণভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে। পাওলো মাউরোর মতে, নয়া প্রয্য়ুক্তিকে বৃহত্তর স্বার্থে কাজে লাগানোর এই পদ্ধতিগুলি প্রতটি দেশ একে অপরের থেকে শিখতে পারে।
আইএমএফ-এর ‘ফিসকাল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টে’র ডাইরেক্টর ভিটর গ্যাসপার জানিয়েছেন, নয়া প্রযুক্তির প্রয়োগে ভারতের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে আইএমএফ। তিনি বলেছেন, “প্রযুক্তির প্রয়োগে, সবথেকে অভাবীদের সহায়তার জটিলতম সমস্যাগুলি সমাধান করা যায়। এটাই আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহারের অন্যতম অনুপ্রেরণা।” শুধু ভারত নয়, সরকারি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আফ্রিকার বহু দেশের সঙ্গেও হাত মেলাচ্ছে আইএমএফ। ভিটর গ্যাসপার বলেছেন, “আফ্রিকাতেও, উদ্ভাবনী প্রযুক্তির অনেক প্রাসঙ্গিক এবং অনুপ্রেরণামূলক উদাহরণ রয়েছে। সেই সব অভিজ্ঞতার আদান-প্রদানের মাধ্যমে আমরা শেখার চেষ্টা করছি। ভারতে, আফ্রিকায় এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে যেভাবে প্রযুক্তিকে এই কাজে লাগানো হচ্ছে, তা অত্যন্ত বিস্ময়কর।”