দেহরাদুন: যত দিন গড়াচ্ছে, ততই বিপদ বাড়ছে দেবভূমিতে। ধ্বংসের মুখে উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) জোশীমঠ (Joshimath)। সেখানে ধীরে ধীরে বসে যাচ্ছে মাটি, ফাটল ধরছে বাড়িতে। চলতি সপ্তাহেই সাধারণ মানুষ এই বিষয়টি লক্ষ্য করেন। ৬০০-রও বেশি বাড়িতে ইতিমধ্যেই ফাটল ধরেছে। এবার ভেঙে পড়ল একটি মন্দিরও। শুক্রবার বিকেলে আচমকাই ভেঙে পড়ে জোশীমঠের একটি বাড়ি। এরপরই আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দা। প্রাণের ভয়ে বহু বাসিন্দাই রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। প্রবল ঠান্ডার মধ্যেও তাঁরা খোলা আকাশের নীচেই রাত কাটান। আজ, শনিবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামীর এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা। আপাতত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একটি বিশেষজ্ঞের দলও বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে এনডিআরএফের বিশেষ দল।
নির্বিচারে গাছ কাটা ও পাহাড় খনন করে উন্নয়নমূলক একাধিক প্রকল্পের কারণেই উত্তরাখণ্ডে মাটি আলগা হয়ে গিয়েছে। একের পর এক ধস, হিমবাহে ভাঙন ও তার জেরে হড়পা বান সে কথারই জানান দিয়েছে। বিনা পরিকল্পনায় পাহাড় খনন ও যথেচ্ছ নির্মাণকাজের কী পরিণতি হতে পারে, তার ফল হাতেনাতে ভোগ করছেন জোশীমঠের বাসিন্দারা। জোশীমঠের পুরসভা প্রধানের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিধস ও বাড়িতে ফাটলের জেরে ৩ হাজারেরও বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা জোশীমঠের ১০ শতাংশ জনগণ। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বাড়ির পাশাপাশি রাস্তাঘাটেও লম্বা চিড় বা ফাটল ধরেছে। এবং সেই ফাটল ক্রমশ বড় হচ্ছে। একাধিক বহুতল হোটেলগুলিও বেঁকে গিয়েছে।
শুক্রবার বিকেলেই জোশীমঠের একটি মন্দির হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। তবে দুর্ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর মেলেনি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দিনকয়েক আগেই মন্দিরে ফাটল দেখা গিয়েছিল। তারপরই সুরক্ষাবশত অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বিগ্রহ। এরপরই শুক্রবার ভেঙে পড়ে মন্দির।
শুধু জোশীমঠই নয়, পার্শ্ববর্তী আউলি শহর, যেখানে পর্যটকরা ভিড় জমান, সেখানেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এরপরই সুরক্ষাবশত প্রশাসনের তরফে আউলিতে গাড়ি ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে হাইডেল পাওয়ার প্লান্ট ও চারধাম রোডের মতো বড় বড় প্রকল্পগুলিও। যেসমস্ত পরিবার ফাটলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাদের আগামী ৬ মাস অবধি মাসিক ৪ হাজার টাকা পাবেন বাড়িভাড়া বাবদ। মুখ্যমন্ত্রীর রিলিফ ফান্ড থেকে এই খরচ বহন করা হবে।