কানপুর: একটি কুকুরের মৃত্যু নিয়ে উত্তাল, উত্তর প্রদেশের কানপুর। গত ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের রাতে সর্বোদয় নগর এলাকায় মৃত্যু হয়েছিল পথকুকুরটির। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক কারখানা মালিক ওই কুকুরটিকে গুলি করে হত্যা করেছে। এই গুরুতর অভিযোগের মধ্যে, কুকুরটির মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ফের একবার ময়নাতদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত বুধবার রাতে কুকুরের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে এনেছে কাকদেও থানার পুলিশ। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি, তবে স্থানীয় পশুপ্রেমীরা এই ঘটনার শেষ না দেখে ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন।
সূত্রের খবর, ২৬ জানুয়ারি রাতে দুটি পথকুকুরকে গুলি করে মারার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় এক কারখানা মালিক জ্ঞানেন্দ্রর বিরুদ্ধে। একটি কুকুরের মৃত্যু হয়, অপরটি গুরুতর জখম হয়েছিল। স্থানীয় পশুপ্রেমীদের অভিযোগের ভিত্তিতে, কাকদেও থানার পুলিশ পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ আইনের ধারায়, কুকুরটিকে হত্যা করার একটি মামলা দায়ের করে। সরকারি পশু চিকিৎসকদের দিয়ে কুকুরটির দেহের ময়নাতদন্তও করানো হয়। এরপর, রীতিমতো শোভাযাত্রা করে গিয়ে, কাছাকাছি এক জায়গায় কুকুরটিকে কবর দিয়েছিলেন স্থানীয় পশুপ্রেমীরা।
তবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কুকুরটিকে গুলি করে হত্যার বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা মেলেনি। বরং জানা যায় কুকুরটিকে কোনও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ফলে এই হত্যার রহস্য আরও জটিল হয়ে উঠেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মানতে চাননি স্থানীয় পর্বতারোহী গুড়িয়া ঠাকুর। তাঁর নেতৃত্বে কাকদেও এলাকার পশুপ্রেমীরা বিক্ষোভ মিছিল করে পুলিশ প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচারের আবেদন করেছেন। পুলিশ কমিশনার বিপি যোগদণ্ডের কাছে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবি জানান তাঁরা।
কমিশনারের নির্দেশে পুলিশ ফের এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। গুড়িয়া ঠাকুরের অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিষয়টি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন অভিযুক্ত জ্ঞানেন্দ্র। তবে, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি পুলিশ। এই নিয়ে অভিযুক্তকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পাশাপাশি, আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ ইন্সপেক্টর নইম খান জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় পশুপ্রেমীদের দাবি, গত ২৬ জানুয়ারি রাতে জ্ঞানেন্দ্রর বাড়ির কাছে ওই কুকুরদুটি ঘেউ ঘেউ করছিল। তাতে বিরক্ত হয়ে, তাদের উপর গুলি চালিয়েছিলেন জ্ঞানেন্দ্র। গুড়িয়া ঠাকুর জানিয়েছেন, তাঁরা চান এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। পশু নিষ্ঠুরতা সংক্রান্ত এই ধরনের ঘটনায় সরকারের কঠোর পদক্ষেপ করা উচিত। নাহলে, এই ধরনের ঘটনা বাড়তেই থাকবে। পিপল ফর অ্যানিম্যাল সংগঠনের পক্ষ থেকে পশু নিষ্ঠুরতা সংক্রান্ত আইনে শাস্তি ও জরিমানা বাড়ানোর দাবিও তোলা হয়েছে।