বেঙ্গালুরু: দেশে প্রথম ওমিক্রন (Omicron) আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল কর্নাটকে (Karnataka)। এই নয়া ভ্যারিয়েন্টের দৌলতেই রাজ্য়ে ক্রমশ উর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ (COVID-19)। চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই রাজ্য সরকারের তরফে বারংবার বলা হয়েছিল যে, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে বিধি নিষেধ আরও কড়া হতে পারে। মঙ্গলবার বিকেলে সেই সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দিল বাসবরাজ বোম্মাই(Basavaraj Bommai)-র সরকার। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হল, চলতি সপ্তাহের শুক্রবার থেকেই চালু করা হচ্ছে সপ্তাহন্তে কার্ফু (Weekend Curfew)। এছাড়া কেরল, গোয়া ও মহারাষ্ট্র থেকে আগত যাত্রীদের রাজ্যে প্রবেশের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা (RT-PCR Test) করাতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।
রাজ্যে হঠাৎ সংক্রমণ বৃদ্ধির পিছনে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকোই দায়ী করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। মঙ্গলবারই কর্নাটকে নতুন করে ১৪৯ জন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মেলে, যা রাজ্যে সর্বোচ্চ ওমিক্রন সংক্রমণের সংখ্যা। রাজ্য়ের রাজস্ব মন্ত্রী আর অশোক মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “রাজ্যে প্রায় পাঁচগুণ ওমিক্রন সংক্রমণ বে়ড়েছে। আজ নতুন করে ১৪৭ জন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। করোনা সংক্রমণও দ্বিগুণ গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাত্র তিনদিনেই আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ২ হাজার ৫৩-এ দাঁড়িয়েছে।”
নৈশ কার্ফু, জমায়েতে নিষেধাজ্ঞার মতো করোনাবিধি জারি করা হয়েছিল আগেই। সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতেই সেই নিয়ম আরও কঠোর করা হল। রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, শুক্রবার থেকে ফের সপ্তাহন্তে কার্ফু চালু করা হচ্ছে। শুক্রবার রাত ১০টা থেকে সোমবার ভোর ৫টা অবধি এই বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। এছাড়া রোজ রাত ১০টা থেকো ভোর ৫টা অবধি নৈশ কার্ফুও জারি থাকবে। কার্ফু চলাকালীন অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা, গণপরিবহন চালু থাকবে এবং হোটেলগুলিও খোলা থাকবে। সমস্ত অফিসকেই সোমবার থেকে শুক্রবার অবধি অফিস চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিটিং, মিছিল, বিক্ষোভ বা জমায়েতের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
রাজ্যের সংক্রমণের ৮৫ শতাংশই বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা হওয়ায়, আগামী দুই সপ্তাহের জন্য বেঙ্গালুরুর সমস্ত স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুল, কলেজই বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেবলমাত্র মেডিকেল ও প্যারা মেডিকেল কলেজগুলিতে পঠনপাঠন চালু রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চালু থাকবে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পঠন পাঠনও।
কর্নাটকের সমস্ত বার, পাব, ক্লাব, রেস্তরাঁ, সিনেমা হল, থিয়েটার, অডিটোরিয়াম, সুইমিং পুল ও জিমে কেবল ৫০ শতাংশের প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। রেস্তরাঁ, হোটেল ও পাবে যারা সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত, কেবল তাদেরই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানবাড়ির ক্ষেত্রে খোলা জায়গায় ২০০ জনের বেশি আমন্ত্রণ করা যাবে না এবং বদ্ধ জায়গায়, অর্থাৎ কোনও অনুষ্ঠান বাড়ি বা হলের ভিতরে হলে, সর্বাধিক ১০০ জনকে আমন্ত্রণ করা যাবে।
কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ কে সুধাকর বলেন, ” সংক্রমণের প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে আমরা দেখেছিলাম যে সংক্রমণের হার ১৫ দিন বা ৮-১০ দিনে দ্বিগুণ আকার ধারণ করছিল। কিন্তু বর্তমানে ১-২দিনেই সেই সংখ্যাটা দ্বিগুণ আকার ধারম করছে, যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।”