বেঙ্গালুরু: আধুনিক সমাজের মহিলাদের নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ কে সুধাকর (Dr K Sudhakar)। তিনি বলেন, “আধুনিক ভারতীয় নারীরা বিয়ে করতে চান না। বিয়ে করলেও তাঁরা সন্তান ধারণ করতে চান না, সারোগেসির মাধ্যমেই মা হতে চান তাঁরা।” স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য়ের পরই রাজ্যজুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে।
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস (World Mental Health Day) উপলক্ষে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরোলজিক্যাল সায়েন্সে (NIMHANS) গিয়েছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেখানেই তাঁকে বক্তব্য রাখতে অনুরোধ করা হয়। তিনি মঞ্চে উঠে বলেন, “আমি অত্যন্ত দুঃখিত যে আমায় এই কথা বলতে হচ্ছে, কিন্তু আজকের দিনে অনেক আধুনিক ভারতীয় নারীই একা থাকতে চান, বিয়ে করতে চান না। যদি বা বিয়ে করেন, তবে সন্তান ধারণ করতে চান না। তারা সারোগেসির সাহায্য় নিয়েই অভিভাবক হতে চান। এই যে মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে, তা সঠিক নয়।”
ভারতীয় সমাজে পাশ্চাত্য সভ্যতার প্রভাবেই সাধারণ মানুষ এখন তাদের মা-বাবাকে তাদের সঙ্গে রাখতে চাইছেন না বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “দুঃখের বিষয় হল আজ আমরা পাশ্চাত্যের দেখানো পথ ধরেই চলছি। আমরা চাই না যে আমাদের মা-বাবা আমাদের সঙ্গে থাকুক, দাদু-দিদাকে সঙ্গে রাখা তো দূরের কথা।”
দেশে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুধাকর জানান, দেশের প্রতি ৭ জনের মধ্যে একজনের কিছু না কিছু মানসিক সমস্য়া থাকেই। তা অতি সামান্য হতে পারে বা গুরুতর কিছু। তবে তিনি মনে করেন, নিজের মানসিক অশান্তি ও উদ্বেগকে নিয়ন্ত্রণ করাও একটা শিল্প, যা ভারতীয়দের শেখার প্রয়োজন নেই, বরং বিশ্বের কাছে তুলে ধরা উচিত। যোগাসন, ধ্যান ও প্রাণায়ামের যে শিক্ষা আমাদের পূর্ব পুরুষরা হাজার বছর আগে শিখিয়ে গিয়েছে, সেটিকেই কাজে লাগাই আমরা।
করোনা সংক্রমণ ও মানসিক স্বাস্থ্যে তার প্রভাব সম্পর্কেও তিনি বলেন, “এই সংক্রমণের জেরে মানুষের ভয়ে একটা ভয়, চাপা দুশ্চিন্তার সৃষ্টি করেছে, যার জেরে এখন মানুষ একে অপরকে স্পর্শ করতেও দ্বিধা বোধ করে। এই করোনাকালে কর্নাটক সরকারের তরফে করোনা রোগীদের জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এখনও অবধি আমরা ২৪ লক্ষ করোনা রোগীর কাউন্সেসিং করেছি, জানিনা অন্য কোনও রাজ্য এটা করতে পেরেছে কিনা।”
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরোলজিক্যাল সায়েন্সকেও তিনি ধন্যবাদ জানান তাদের ডিজিটাল মাধ্যমে টেলি-মেডিসিনের উদ্যোগের জন্য। সেপ্টেম্বর মাস থেকে কর্নাটককে প্রতি মাসে দেড় কোটি করোনা টিকা দেওয়ার জন্যও তিনি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্যকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগেই যে দেশের ৯৪ কোটি মানুষ এখনও অবধি করোনা টিকা পেয়েছেন, সেই উদ্য়োগকেও সাধুবাদ জানান তিনি।
আরও পড়ুন: Maharashtra Bandh: উৎসবের মাঝেই বনধের ডাক রাজ্যজুড়ে, শান্তি বজায় রাখতে পথে নামবে কয়েক হাজার বাহিনী