বেঙ্গালুরু: কোন আইনে বলা রয়েছে মসজিদগুলিতে তারস্বরে লাউডস্পিকার চালানো যাবে? প্রশ্ন তুলল আদালত। কর্ণাটক হাইকোর্ট আজ রাজ্য সরকার এবং পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে, আইনের কোন ধারায় ১৬ টি মসজিদে লাউডস্পিকার ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে তা জানানোর জন্য। একইসঙ্গে, এই ধরনের শব্দ দূষণ রোধ করার জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাও জানতে চেয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট।
আজ কর্ণাটক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতু রাজ অগস্থি এবং বিচারপতি সচিন শঙ্কর মাগাদুমের ডিভিশন বেঞ্চে আজ এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলাকারী পি রাকেশের আইনজীবী শ্রীধর প্রভু আদালতে জানিয়েছেন, কোনও সভা করার জন্য চিরকালের জন্য লাউডস্পিকার ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া যায় না। উল্লেখ্য, রুল ৫ (৩) অনুযায়ী, এই ধরনের কোনও লাউড স্পিকার কিংবা সভার জন্য কোনও সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করার বিরুদ্ধে উল্লেখ রয়েছে। ওই ধারা অনুযায়ী, রাজ্য সরকার কেবল রাতে দুই ঘণ্টার জন্য অর্থাৎ রাত ১০ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত লাউড স্পিকার ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারে।
এ ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট কারণ থাকা দরকার। কেবলমাত্র কোনও ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বা কোনও উৎসবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্যই লাউড স্পিকার ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারে রাজ্য প্রশাসন। তাও আবার ঘন ঘন করা যাবে না। বছরে সর্বোচ্চ ১৫ দিন লাউড স্পিকার ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
কর্ণাটক ওয়াকফ বোর্ড মসজিদগুলিকে লাউড স্পিকার ব্যবহারের যে অনুমতি দিয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মামলাকারীর আইনজীবী। বলা হয়েছে, লাউড স্পিকার ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার কোনও এক্তিয়ারই নেই কর্ণাটক ওয়াকফ বোর্ডের।
এদিকে মসজিদগুলির পক্ষের আইনজীবী এই দাবির বিরোধিতা করেছেন আদালতে। মসজিদ পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য, পুলিশ প্রশাসনের থেকে লাউড স্পিকার চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সবরকম অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। লাউড স্পিকারগুলিতে এমন একটি ডিভাইস বা যন্ত্রাংশ লাগানো রয়েছে, যা শব্দ দূষণের মাত্রায় পৌঁছানোর আগে, তা নিয়ন্ত্রিত করে দেয়। রাত ১০ টা থেকে সকাল ৬ টার মধ্যে লাউড স্পিকার ব্যবহারও করা হয় না।
এর পাশাপাশি কর্ণাটক নাইট ক্লাবগুলি এবং যানবাহনগুলি থেকে তৈরি হওয়া শব্দ দূষণ নিয়েও স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে আদালত। চার চাকার গাড়ি এবং বাইকগুলিতে মোটর ভিকেলস অ্যাক্ট না মেনেই তৈরি সাইলেন্সার লাগানোর ফলে যে শব্দদূষণ তৈরি হচ্ছে, তা নিয়ে মামলা করেছে হাইকোর্ট। কর্ণাটক হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ. “আপনার বাড়ি যদি বড় রাস্তার কাছে হয়, একমাত্র তাহলেই আপনি বুঝবেন এই গাড়িগুলির জন্য বড় রাস্তার কাছে বাড়িগুলিতে থাকা কতটা কষ্টকর হয়।”
এই পর্যবেক্ষণ জানানোর পর কর্নাটক হাইকোর্ট রাজ্য সরকার এবং পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে এই ধরনের শব্দদূষণ রোধ করার জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা দ্রুত আদালতকে জানানোর জন্য। যে গাড়িগুলিতে মোটর ভিকেলস অ্যাক্ট না মেনে সাইলেন্সার লাগানো হয়েছে, সেগুলিকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে নাইট ক্লাব এবং অন্যান্য যে সব জায়গা থেকে শব্দ দূষণ হয়, সেগুলির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার রিপোর্ট আদালতে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : Jagdeep Dhankhar: ‘কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে GTA-তে, অমিত মিত্র জবাব দিন’