বেঙ্গালুরু: রহস্যজনক পরিস্থিতিতে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল কর্নাটকের লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের এক মঠের প্রধান সাধু বাসবলিঙ্গ স্বামীকে। পুলিশ জানিয়েছে ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার ভোরে। কর্ণাটকের রামানগর জেলায় কাঞ্চুগাল বন্দে মঠের এক কক্ষের জানালার গরাদ থেকে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ৪৫ বছরের ওই সাধু দুই পৃষ্ঠার একটি সুইসাইড নোট লিখে রেখে গিয়েছেন। সেই সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে পুলিশ মনে করছে তাঁর মৃত্যুর পিছনে ‘ব্ল্যাকমেল’ বা হুমকির কোনও ঘটনা লুকিয়ে রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে তার শেষ কয়েকটি ফোন কল খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনার একটি মামলা দায়ের করে, তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সুইসাইড নোটে বাসবলিঙ্গ স্বামী নিজেই ‘ব্ল্যাকমেল’-এর অভিযোগ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “কয়েকজন ব্যক্তি তাঁকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন।” তাদের ‘হয়রানির’ শিকার হওয়ার পরই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেছেন, ওই ব্যক্তিরা তাঁর চরিত্র হনন করে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করেছিলেন। সুইসাইড নোটে ওই ব্যক্তিদের নামও জানিয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে সেই নামগুলি জানাতে রাজি হয়নি পুলিশ। পুলিশের এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, এক মহিলা তাঁকে ফোন করে ব্ল্যাকমেল করেছিল। প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সাল থেকে ওই মঠের প্রধানের পদে ছিলেন বাসবলিঙ্গ স্বামী। সম্প্রতি মঠ প্রধান হিসেবে তাঁর রজত জয়ন্তী বর্ষও উদযাপন করা হয়েছিল।
সূত্রের খবর, সোমবার সকাল ছটা বেজে গেলেও পূজার ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। সাধারণত, বাসবলিঙ্গ স্বামী ভোর ৪টের মধ্যে ঘুম থেকে উঠে পড়তেন এবং পুজোর ঘরের দরজা খুলে দিতেন। কাজেই স্বাভাবিকভাবেই মঠের অন্যান্য সদস্য ও কর্মীরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তারা দরজায় ধাক্কা দেন, স্বামীকে ফোনও করেন। তারপরও, তাঁর কোনও সাড়া না পাওয়ায়, তারা পিছনের দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করেছিলেন। এরপর, সাধুকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে, তারা পুলিশে খবর দিয়েছিলেন। যথাযথ পুলিশি প্রক্রিয়া এবং ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করার পর, সোমবার সন্ধ্যাতেই বাসবলিঙ্গ স্বামীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে, চিলুমে মট-এর প্রধানকেও একইভাবে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। অদ্ভুতভাবে তাঁর নামও ছিল বাসবলিঙ্গ স্বামী। তিনি অবশ্য তার স্বাস্থ্যের ক্রমাবনতির জন্য বিচলিত হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন।