শ্রীনগর : চলতি মাসে কাশ্মীরে ১১ জন সাধারণ নাগরিকের হত্যা (Civilian killings) হয়েছে। তার মধ্যে শেষ ৪৮ ঘণ্টায় চার জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ঝাঝরা করে দেওয়া হয়েছে গুলিতে। তবে এই নারকীয় বর্বরতার সঙ্গে কাশ্মীরীরা জড়িত নয় বলেই মনে করছেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের (National Conference) সভাপতি তথা জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ (Farooq Abdullah)। তাঁর মতে, কাশ্মীরীরদের বদনাম করার জন্য কেউ বা কারা ষড়যন্ত্র করে এই হামলা চালাচ্ছে। এই ধরনের ঘটনার মাধ্যমে কাশ্মীরের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মত তাঁর।
আজ দুই বিহারের বাসিন্দাকে কাশ্মীরে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার পর ন্যাশনাল কনফারেন্সের সভাপতি বলেন, “এই হত্যালীলা দুর্ভাগ্যজনক এবং ষড়যন্ত্র করে এই কাজ করা হয়েছে। কাশ্মীরীরা এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। এটা কাশ্মীরীদের বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে।”
আজ যে দু’জন সাধারণ নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা, তাঁরা কেউই কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দা নন। বিহার থেকে কাজ করতে কাশ্মীরে গিয়েছিলেন। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না। জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারালেন তাঁরা। আজ উপত্যকার কুলগাম জেলার ওয়ানপোহ এলাকায় তাঁদের গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। জঙ্গিদের গুলিতে জখম হয়েছেন আরও এক শ্রমিক। তিনিও ভিন রাজ্য থেকে কাজ করতে কাশ্মীরে গিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, গতকালই বিহারের এক ফুচকা বিক্রেতা এবং উত্তর প্রদেশের এক কাঠের মিস্ত্রিকে গুলি করে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। বিহারের ওই ফুচকাওয়ালার নাম ছিল অরবিন্দ কুমার শাহ। তাঁকে শ্রীনগরে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। আর উত্তর প্রদেশের কাঠের মিস্ত্রি শাগির আহমেদকে পুলওয়ামায় হত্যা করেছিল জঙ্গিরা।
অক্টোবরের ২ তারিখ থেকে ৮ তারিখের মধ্যে সাত জন নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। তাঁদের মধ্যে চার জনই ছিলেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। একের পরে এক সাধারণ নাগরিক হত্যার ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে।
উল্লেখ্য, গতকালের ওই নারকীয়, বর্বরোচিত ঘটনার তীব্র নিন্দা করে টুইট করেছেন জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। লিখেছেন, ‘একজন ফুচকা বিক্রেতাকে গুলি করে মারার তীব্র বিরোধিতা করছি। সাধারণ নিরপরাধ মানুষকে খুনের আরও একটি ঘটনা ঘটল। এই অরবিন্দ কুমাররা পেটের দায়ে শ্রীনগরে আসেন। তাঁদের যদি প্রাণ যায় তা অত্যন্ত অনুশোচনার, অনুতাপের বিষয়।’
নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে মেরে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করাই সন্ত্রাসবাদের মূল লক্ষ্য। সবসময় যে তাতে সাফল্য আসে তেমন নয়। তবে এও ঠিক, বহু সময় নিরপরাধ মানুষের প্রাণ যায় এই পৈশাচিক খেলায়। পর পর দু’দিনে উপত্যকায় চার সাধারণ নাগরিকের প্রাণ নিল জঙ্গিরা। এই নিয়ে চলতি মাসে মোট ১১ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন : Kashmir: জঙ্গিদের গুলিতে হত্যা আরও ২! ভিন রাজ্যের থেকে আসা প্রত্যেককে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরানোর নির্দেশ